
দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। গত এক দশকে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ কমেছে। এখন পার্টির লোকজন ভোটকেন্দ্রে যায় না, তারা জানে তাদের দলই জিতবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে ভোটারকে কেন্দ্রে ফেরানোর উপায় নিয়ে ভাবতে হবে।
গতকাল রোববার সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন আয়োজিত এক অনলাইন বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান এবং সঞ্চালনা করেন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। সুজন সহসভাপতি বিচারপতি এম এ মতিন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক আসিফ নজরুলসহ আরও অনেকে এ সময় বক্তব্য দেন।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে ফের ফিরতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের প্রধান কাজ। সেটা না পারলে তারা ব্যর্থ। তিনি আরও বলেন, ভোটাররা ভোট দিতে না পারলে কী করবেন তা জানেন না। তাই আজ পর্যন্ত এ কারণে কোনো মামলাও হয়নি। কাজেই ভোট দিতে না পারলে কী করবেন, সেটি ভোটারদের জানাবে নির্বাচন কমিশন।
বৈঠকে এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। কেউই সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। এজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সেখানে কিছু সংস্কার হতে পারে, তবে সে ব্যবস্থা অবশ্যই ফিরিয়ে আনা জরুরি।
আবু আলম শহীদ খান বলেন, যারা আয়োজনের সঙ্গে জড়িত, তাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। তারা এখনো জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেনি।
রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, একের পর এক বিতর্কিত নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে নির্বাচন ব্যবস্থার কেন্দ্রীয় নায়ক ভোটারদের অপমান করা হচ্ছে। তাদের গুরুত্বহীন করে তোলা হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচনে যত কম দল অংশ নিচ্ছে, যত কম মানুষ ভোট দিচ্ছে, তত বেশি ক্ষমতাসীনদের জন্য সুবিধা হচ্ছে। প্রতিযোগিতা না থাকলে ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। এখন নিজেদের মধ্যে ঝুঁকিমুক্ত নির্বাচনের একটি ধারা দাঁড়িয়ে গেছে।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা কোন দিকে যাচ্ছি তা কিছুটা স্পষ্ট হবে। ২০১৩ সালে সুষ্ঠু হলেও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনগুলোও সুষ্ঠু হয়নি। পরের একাদশ সংসদ নির্বাচনও সুষ্ঠু হয়নি। গত নির্বাচনে বিরোধী দল অংশ নিয়েছিল। এবার ভোটারদের সামনে কোনো বিকল্প থাকবে না। বিরোধী দল অংশ না নেওয়ায় এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য হবে না।