
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তপশিল অনুযায়ী নির্ধারিত প্রচার-প্রচারণার নবম দিনে গতকাল বুধবার বৃষ্টির মধ্যেই বিরামহীন প্রচার চালিয়েছেন প্রার্থীরা। তাদের প্রচারে বৃষ্টি বাধা হতে পারেনি। গতকাল মহানগরীর ছয়দানা, কাউলতিয়া, সালনাসহ আশপাশের এলাকায় মেয়র প্রার্থী মা জায়েদা খাতুনের পক্ষে প্রচারে অংশ নেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লা খান নগরীর কোনাবাড়ী থানা এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন বৃষ্টি উপেক্ষা করে গণসংযোগ করেন মহানগরের ভাওয়াল রাজবাড়ি আদালত পাড়ায়।
মায়ের পক্ষে প্রচারে অংশ নিয়ে দুদকের তলব প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুদক হঠাৎ আমাকে চিঠি দিয়েছে, এই চিঠির অর্থ কী? দেশবাসী তো বোকা নয়, সবই বোঝে। দুদক যেন ন্যায়বিচার করে, রাজনৈতিক হিসাব করে মাঠে না নামে। রাষ্ট্রের এসব বড় বড় সংস্থা যদি দুর্বল হয়,
রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি অপব্যবহার হয়, ভালো মানুষকে যদি হয়রানি করা হয়, তবে মানুষ এগুলো আর মানবে না। এগুলো তছনছ হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, আমার মায়ের নির্বাচন করছি, আমাকে হয়রানি করা মানে মাকে হয়রানি করা। সেজন্য আমি মনে করি আমাকে তারা জেল দেবে, ক্ষতিগ্রস্ত করবে, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি না থাকলে জনগণ আমার মায়ের পাশে থাকবে। মায়ের টেবিল ঘড়ি প্রতীককে তারা জয়লাভ করাবে।
জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের আরও বলেন, আমার মা জায়েদা খাতুন যে আদর্শ ও উদ্দেশ্য নিয়ে নির্বাচন করছেন, সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচনে যে জয়লাভ করে তাকেই আমরা মেনে নেব। সরকার একজন মানুষকে জয়লাভ করাতে কৌশলে যেন কোনো কাজ না করে। আমার মা জনগণকে ভালোবাসে, মাকেও জনগণ ভালোবাসে। হাজার হাজার জনগণ আজ এক হয়ে জায়েদা খাতুনের পক্ষে ঘড়ি প্রতীকে ভোট চাইছে। আমাদের মৃত্যু না হলে শেষ পর্যন্ত মাঠে আছি, থাকব, লড়ব।
মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন বলেন, ‘বড় বড় লিডার টঙ্গী ও পুবাইলের দিকে ভোট চাইতে গেলে ভাঙচুর করে। পিডাপিডি, হুড়াহুড়ি, জুতা নিয়ে মিছিল করে, এগুলো কী? আমার কি ভোট চাওয়ার অধিকার নেই? সবাই সহযোগিতা না করলে তো পারব না। আমি নিরাপত্তা চাই, যারা এগুলো করতাছে তারা পুরান লিডার আর আমি নতুন। আমাকে দেখে তাদের এত ভয় কেন?’
এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লা খান গতকাল নগরীর কোনাবাড়ী থানা এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন। সকালে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কুদ্দুস মার্কেটে পথসভা থেকে গণসংযোগ শুরুর কথা থাকলেও বৃষ্টির জন্য কর্মসূচি সময়মতো হয়নি। এরপর সেখানে নির্ধারিত পথসভা শেষে কোনাবাড়ীতে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলগেট এলাকায় ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচনী অফিস প্রাঙ্গণ, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় কার্যালয়, কোনাবাড়ী কলেজ মাঠ এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তেঁতুলতলা এলাকায় পথসভা করেন আজমত উল্লা। এসব পথসভায় তিনি বলেন, আমরা একজোট হয়েছি, ২৫ মে যে নির্বাচন হবে, তা হবে সম্পূর্ণভাবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ। যা হবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। এ নির্বাচন সম্পর্কে যারা মিথ্যাচার করছে, আমি তাদের জবাব দিতে চাই।
জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন সকালে বৃষ্টি উপেক্ষা করে মহানগরের ভাওয়াল রাজবাড়ি আদালত পাড়া থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হচ্ছে পরিবেশ এখনো ভালো আছে। নির্বাচন কমিশনও চাচ্ছে একটি ভালো ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে। আমরাও চাই একটি ক্রেডিবল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।