ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ভাত দিতে দেরি করায় হোটেলে হামলা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।ছবি : সংগৃহীত

ফুরিয়ে যাওয়ায় ভাত দিতে দেরি হয়েছে। তাই, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশের হোটেল মালিক পিন্টুকে মারধর ও হোটেলের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে তালাবদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর পাঁচ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে প্রধান ফটক এলাকায় অবস্থিত দোকানদার মালিক সমিতি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে রাজনৈতিক পরিচয়ে এ হামলা চালানো হয়েছে।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে ইদানীং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের দোকানগুলোসহ শেখপাড়া বাজার, মধুপুর, লক্ষ্মীপুর ও হরিনারায়ণপুর বাজারের দোকানদারদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে চলেছে। এতে এলাকার জনমনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

আমরা শত লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সহ্য করে ছাত্রছাত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারবর্গের সেবায় ব্রত। তবুও রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু ছাত্র (বিশাল, তুষার, পিয়াস ও তাদের সহযোগীরা) এলাকার দোকানদারদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেই চলেছে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে পিন্টুর হোটেলে ভাত ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে ইবি থানার এসআইসহ শত লোকের সামনে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র তুষার ও তার দলবল পিন্টু হোটেলের মালিক পিন্টুকে বেধড়ক মারধর ও হোটেলের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে হোটেল তালাবদ্ধ করে। আমরা দোকানদার মালিক সমিতি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার দাবি করে দোকান মালিক সমিতি।

এ ব্যাপারে হোটেল মালিক পিন্টু বলেন, ‘খাবার দিতে দেরি করায় দোকানের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে তারা। এ ছাড়া চামচ দিয়ে আমাকে মারধর করেছে। দোকান খুললে আবার মারার হুমকিও দেন তারা।’

হোটেল ভাঙচুর ও মালিককে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত তুষার বলেন, ‘আগে খাবার চাওয়ার পরও আমাদের পরে যারা আসছে তাদের খাবার দেয়। এ নিয়ে তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। তবে আমি হোটেল ভাঙচুর ও মারধর করিনি।’

এদিকে গতকাল বুধবার ফের দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক এলাকায় শিক্ষার্থী ও দোকানদারদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। অভিযুক্ত তুষার, বিশাল ও পিয়াস ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

ইবির জিয়া হলে ছাত্রলীগের হাতে প্রাধ্যক্ষ লাঞ্ছিত

এদিকে ইবির শহীদ জিয়াউর রহমান হলে ছাত্রলীগের হাতে প্রাধ্যক্ষ সহযোগী অধ্যাপক আবদুল জলিল পাঠান লাঞ্ছিত ও কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, গত সোমবার শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। এতে সবার আবাসিকতা করার বিষয়টি উঠে আসে। পরদিন রাতে শিক্ষার্থীদের তথ্য নিতে হলের রুমগুলো পরিদর্শনে যান প্রাধ্যক্ষ, হাউস টিউটর প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস, হলের উপ-রেজিস্ট্রার তারিক উদ্দীন আহমেদসহ অন্যরা। এ সময় হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ব্যঙ্গ করে কথা বলেন। পরে হল থেকে নিচে নামলে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডার হয়। এ সময় তারা প্রাধ্যক্ষের কার্যালয় ভাঙচুর করে।

প্রাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল পাঠান বলেন, গত ১০ বছরে শিক্ষার্থীদের কোনো ডাটাবেস নেই। জিয়া হল যেন একটা আবর্জনায় পরিণত হয়েছে। আবাসিক ও অনাবাসিক ছাত্রদের ডাটাবেস নিতে গিয়ে আমাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। আমার কার্যালয়েও ভাঙচুর করা হয়েছে। অন্যায্য, অনৈতিক ও অছাত্রসুলভ আচরণ করেছে ছাত্রলীগ।

তবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলেন, পূর্ব নির্দেশনা ছাড়াই হলে রেড দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ রেড দেওয়ায় অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এজন্য শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে এমনটি করেছেন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com