চুয়াডাঙ্গায় ইপিআই টিকা দেওয়ার ১০ ঘণ্টা পর তাহিয়ান তৌফিক নামে দুই মাসের এক শিশু মারা গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।
শিশুটির বাবা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের তাজউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে দুই পায়ে তিনটি টিকা এবং একটি খাওয়ানো হয়। এরপর বাড়ি এসে ছেলে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। পরে কেনা দুধ খাওয়ানো হয় তাকে। দুপুর থেকে হালকা জ্বর আসে। রাতে নাপা সিরাপ খাওয়ানোর আধঘণ্টা পরই ছেলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
এদিকে এ ঘটনায় গতকাল সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম নিহত শিশুটির বাড়ি পরিদর্শন করেছে। এ সময় নাপা সিরাপসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাৎ হাসানকে প্রধান করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান।
তাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, এর আগেও ছেলেকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সেবার কিছুই হয়নি। এবার টিকা দেওয়ার পর খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ধারণা করছি, টিকা দেওয়ার কারণেই ছেলের মৃত্যু হয়েছে। নাপা সিরাপ খাওয়ানোর জন্য এমন সমস্যা হয়েছে কিনা জানি না।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, আমিসহ স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম শিশুটির বাড়ি পরিদর্শন করে বিস্তারিত শুনেছি। টিকা দেওয়ার কারণে মৃত্যু হয়নি বলে ধারণা করছি। কারণ মৃত্যু হলে টিকা দেওয়ার প্রায় এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যেই মারা যেত। এমন মৃত্যু ১০ লাখে একজনের হয়। আমরা ওই নাপা সিরাপসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। টিকাগুলোর মেয়াদ যাচাই করেছি, কোনো সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, শিশুকে গুঁড়া (বাজারজাত) দুধ খাওয়ানোর জন্য শ্বাসনালিতে আটকে গিয়েও এমন ঘটনা ঘটতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, যেহেতু টিকা কার্যক্রম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা অফিসের আওতাধীন। বিষয়টি শোনার পর সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।