
মিটিং-মিছিল, হামলা-মামলা, পথসভা, লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার। ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচারের সময় ছিল প্রার্থীদের। প্রচারের এই সময়জুড়ে তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছেন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ও তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এ ঘটনায় মামলাও করেছেন তারা। অন্যদিকে পুরোটা সময় নির্বাচনী পরিবেশের প্রশংসা করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান। প্রচারপর্ব শেষে এবার ফলাফলের পালা। সেইজন্য ভোটার ও প্রার্থীদের অপেক্ষা করতে হবে ২৫ মে পর্যন্ত। অন্যদিকে ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে দাবি নির্বাচন কমিশনের।
প্রচারের শেষ দিন গতকাল প্রতিটি মুহূর্তের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে মরিয়া ছিলেন প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি সমান তালে সরব ছিলেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এদিন গাজীপুরের সর্বত্র মাইকে শোনা গেছে প্রার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি। সাধ্যমতো লিফলেটও ভোটারদের হাতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। শেষ মুহূর্তে ভোটারদের মাঝে উৎসবের আমেজ দেখা গেলেও প্রার্থীদের চোখেমুখে ছিল চাপা উত্তেজনা। তবে শেষ দিনের প্রচারে সব প্রার্থীরই চাওয়া ছিল একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোটের।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন গতকাল দুপুরে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। পরে বিকেলে বের হন প্রচারে। ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে ছয়দানা, তেলিপাড়া ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় চষে বেড়ান তিনি।
নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান প্রচারে বের হন দুপুরের পরপরই। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গণসংযোগে দেওয়া বক্তব্যে ক্ষমতাসীন দলের এই প্রার্থী বলেন, কোনো প্রার্থী, কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীকে হয়রানি করা হবে না। সবাই সুন্দর পরিবেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেবেন ভোটের মাধ্যমেই।
অন্যদিকে সকাল থেকেই প্রচারে নামে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান। তিনি মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব, টঙ্গী পশ্চিম, পুবাইল, সদর মেট্রো, সালনা, বাসন, গাছা, কাশিমপুর ও কোনাবাড়ি এলাকায় জটিকা সফর করে হাতপাখা প্রতীকের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন সকাল থেকে গাজীপুর সদর ও গাছা থানার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচার চালান। এ সময় তিনি ভোটারদের প্রতি লাঙ্গল প্রতীকে আস্থা রেখে ভোট প্রত্যাশা করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনি সকালে তার টঙ্গীর বাসায় ইশতেহার ঘোষণা করে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারে অংশ নেন।
গাজীপুর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, আজ (গতকাল) রাত ১২টার পর থেকে সবধরনের নির্বাচনী প্রচার বন্ধ হচ্ছে। ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে বিশ্বাস করি।