
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে পিটিআইর নেতাকর্মীদের তীব্র বাধার মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে দেশটির পুলিশ ও রেঞ্জার্সের যৌথ দল। টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় চেষ্টা করেও তারা লাহোরে ইমরানের জামান পার্কের বাড়িতে ঢুকতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত গ্রেপ্তার অভিযান স্থগিত করে। খবর দ্য ডন ও জিও নিউজের।
গতকাল বুধবার দুপুরে পিটিআইর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে জামান পার্কের বাড়ির সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরে যাওয়ার পর পিটিআই কর্মীদের বাঁধভাঙা উল্লাস দেখা যায়। পিটিআই জানায়, দলের আরও কর্মী জামান পার্কের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের কুমতলব সফল হতে দেওয়া হবে না। পৃথক এক ভিডিওতে ইমরানকে গ্যাস মাস্ক পরা অবস্থায় বাড়ির সীমানার ভেতর দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে যায়।
এদিন সকালে পুলিশ ও রেঞ্জার্সদের যৌথ দল সাঁজোয়া যান নিয়ে আরও আক্রমণাত্মকভাবে ইমরানের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা চালায়। কিন্তু কর্মীদের প্রবল বাধার মুখে ব্যর্থ হয় তারা। বাধে তুমুল সংঘর্ষ। এসময় পিটিআই কর্মীরা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দিকে ইট-পাথর ছোড়ে। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান-টিয়ার গ্যাসের শেলের পাশাপাশি গুলিও চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পিটিআই। বাধার মুখে দুপুরের দিকে বাড়ির কাছ থেকে পিছু হটেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
এটিকে বিজয় হিসেবে ধরে নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন পিটিআই কর্মীরা। আগের দিন মঙ্গলবারও ইমরানকে গ্রেপ্তার করতে তার বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু পিটিআইর কর্মী-সমর্থকদের প্রবল বাধার মুখে তা সম্ভব হয়নি।
খবরে বলা হয়, জামান পার্কের বাইরে নৃশংসতা বন্ধের জন্য গতকাল পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরির করা আবেদনের শুনানি হয়। এ সময় হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক সেলিম শেখ পুলিশি অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেন। এর আগে আদলত পাঞ্জাবের ইন্সপেক্টর জেনারেল উসমান আনোয়ার, প্রাদেশিক মুখ্য সচিব এবং ইসলামাবাদ পুলিশ (অপারেশন) প্রধানকে বিকেল ৩টার মধ্যে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
গতকাল এক টুইট বার্তায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান অভিযোগ করেন, পুলিশের আসল উদ্দেশ্য তাকে অপহরণ ও হত্যা করা। এজন্যই গ্রেপ্তারের নাটক সাজানো হয়েছে। এটি প্রতিরোধে জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানান ৭০ বছর বয়সী এ নেতা। বলেন, আমি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি জামিন বন্ডে সই করেছি; কিন্তু ডিআইজি তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন। তাদের অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই।
প্রসঙ্গত, তোশাখানা মামলায় কয়েক দফা শুনানিতে অংশ নেননি পিটিআইর এই চেয়ারম্যান। যে কারণে তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য ইসলামাবাদ পুলিশের একটি দল গত সোমবার লাহোরে আসে।