জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ধীরগতির ইন্টারনেট সেবায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। পুরো ক্যাম্পাস ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের আওতায় থাকলেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা। বারবার সংযোগ বিচ্যুতি আর কচ্ছপগতির জন্য এটি এখন বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগের কম্পিউটার ল্যাবে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেও ধীরগতির কারণে পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসে ইন্টারনেটের ধীরগতির জন্য প্রায়ই প্রয়োজনীয় কাজে অতিরিক্ত সময় লেগে যায় তাদের। ব্যবহারের সময় বারবার ওয়াইফাই সংযোগ বিচ্ছিন্নও হয়ে যায়। এদিকে করোনা মহামারির সময় থেকে অনলাইন ক্লাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ২০১২ সাল থেকে ওয়াইফাই সংযোগ চালু করা হয়। তবে ২০১৮ সালে নতুন করে বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন নেটওয়ার্কের (বিডিরেন) নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টারনেট
সংযোগ নেয় জবি প্রশাসন। সে সময় পুরো ক্যাম্পাসকে শক্তিশালী ইন্টারনেট ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করে ৭০০ এমবিপিএস গতির ওয়াইফাই চালু করা হয়। বর্তমানে সেটি ৮০০ এমবিপিএসে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু এতেও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা কোনো সুফল পাচ্ছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আইনুল ইসলাম বলেন, ওয়াইফাই সংযোগ থাকলেও তা কোনো কাজে আসছে না। বারবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কখনো সংযোগ পাওয়া গেলেও ইন্টারনেট ব্রাউজ করা যায় না।
ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুল ইসলাম বলেন, দেশের কোনো ক্যাম্পাসে এমন ধীরগতির ইন্টারনেট সংযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না। এখানে যে ইন্টারনেট স্পিড, তাতে মেসেঞ্জারেই চ্যাটিং করা যায় না, অন্য কাজ তো দূরের কথা।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, কোর্সের ব্যবহারিক কাজের জন্য ইন্টারনেট সংযোগের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ক্যাম্পাসের ওয়াইফাই দিয়ে এসব কাজ করা সম্ভব হয় না। কোনো ওয়েবসাইটে সহজে সাইন-ইন করা যায় না। তাই আমাদের মোবাইল ডাটা কিনতে হয়। তবে সবার পক্ষে এভাবে টাকা দিয়ে মোবাইল ডাটা কেনা সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন ও আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার আচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে ওয়াইফাই ও লেনে ৮০০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া আছে। এটা আরও বাড়াতে হবে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ার কারণে হার্ডওয়্যার যন্ত্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এখন স্বাভাবিকের তুলনায় কম স্পিড পাওয়া যাচ্ছে। বিডিরেনের সঙ্গে নতুনভাবে চুক্তিবদ্ধ হলে এসব জিনিস চেঞ্জ করে দেবে। তাহলে আশা করি সমস্যাগুলো সমাধান হবে।
কবে নাগাদ এ সমস্যা সমাধান হবে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, অর্থ সংকটের কারণে নতুন করে চুক্তি করতে আরও সময় লাগবে। নতুন অর্থবছরে হয়তো কাজটি ভালোভাবে করা যাবে।