
হাসি-আনন্দে অন্যরকম দিন কাটল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের। লাল পাঞ্জাবি আর সালোয়ার-কামিজের ওপর নীল টি-শার্ট ও বঙ্গবন্ধুর ছবি-সংবলিত লাল-সবুজ রঙের টুপি পরে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করে তারা। এ সময় সম্মিলিত গান ও জন্মদিনের স্লোগানের মধ্য দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে শিশুরা।
গতকাল শুক্রবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষে ৭০ পথশিশুকে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
এদিন তেজগাঁও সরকারি শিশু পরিবার ও মিরপুর সরকারি শিশু পরিবার থেকে মোট ৬০ শিশুকে আনা হয়। বাকি ১০ শিশুকে আনা হয় ঢাকার বাইরে থেকে। সকাল ৯টার দিকে বিআরটিসির ছাদখোলা বাসে করে আগারগাঁও স্টেশনে এসে পৌঁছে তারা। যে বাসে সাফজয়ী ফুটবল কন্যাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল, সেই বাসে করেই আনা হয় এ শিশুদের। সবার হাতে ছিল নানা রঙের প্ল্যাকার্ড। বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মেট্রোস্টেশনে প্রবেশ করে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে কার্ড নেয় তারা। তারপর নিজের কার্ড নিজে পাঞ্চ করে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে যায় শিশুরা।
দেশাত্মবোধক গান ও জন্মদিনের স্লোগানের মধ্য দিয়ে মেট্রোরেল ভ্রমণ করে এ শিশুরা। আগারগাঁও থেকেই উত্তরা উত্তর স্টেশনে পৌঁছে আবার বিআরটিসি বাসে মেট্রোরেলের প্রদর্শনী ও তথ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। সেখানে কেক কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন করা হয়।
তেজগাঁও সরকারি শিশু পরিবার থেকে আসা পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, অনেক ভালো লাগছে। এই প্রথম উঠছি। কাল রাত থেকে খুব আনন্দে ছিলাম ট্রেনে উঠব বলে। তাদের সঙ্গে এসেছে বান্দরবানের মারমা জনগোষ্ঠীর নুম্মে ছাই ও তার বড় বোন ছাইয়ু নু। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুম্মে ছাই বলে, আমার খুব ভালো লাগছে। অনেক সুন্দর সুন্দর নদী, বিল দেখছি। শোনার পর অনেক ভালো লাগছিল। অনেক আনন্দ করছি। দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে। ট্রেনে উঠেই ফুর্তিতে মেতে ওঠে মিরপুর সরকারি শিশু পরিবার থেকে আসা আরাফাত, সাজ্জাদ, ফারুক ও জাহিদ। তাদের আনন্দ যেন সব আনন্দকে হারিয়ে দেয়। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারুক বলে, আজ প্রথম উঠলাম। শহরের অনেক কিছু দেখতে পারছি।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে আমরা এ আনন্দ আয়োজন করেছি। এর মধ্য দিয়ে শিশুদের মেট্রোরেলের অভিজ্ঞতার ছাপ দিতে চেয়েছি।
বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সাফজয়ী মেয়েদের সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য আমরা একটি দ্বিতল বাস ছাদখোলা করেছিলাম। পরে আরেকটি বাসও ছাদখোলা করেছি। এখন দুটি বাসের একটি পদ্মা সেতু ভ্রমণের জন্য এবং আরেকটি ঢাকা শহরের ভেতরে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আয়োজকরা জানান, মেট্রোরেলে করে আগারগাঁওয়ে ফিরে শিশুদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, জাতীয় সংসদ ভবন, শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ভ্রমণ করানো হয়।