
সুনামগঞ্জ ও মোহনগঞ্জ থেকে তৃতীয় প্রজাতির একটি আইড় মাছের সন্ধান পেয়েছেন সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আরশাদ-উল-আলম। দেশে নতুন সন্ধান পাওয়া এই আইড়ের বৈজ্ঞানিক নাম (Sperata aorella (Blyth, 1858)। এই আইড়টি স্থানীয়ভাবে ভুইত্যা কাঁটা নামে পরিচিত। সুনামগঞ্জের হাওরগুলোতে এই আইড় মাছ প্রচুর পরিমাণে।
সুনামগঞ্জ জেলা সদর মৎস্য আড়ত ও মাছ বাজার এবং মোহনগঞ্জ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে সম্প্রতি ড. আরশাদ এই মাছের নমুনা সংগ্রহ করেন। এটি একটি ছোট জাতের আইড়, ওজন কমবেশি এক কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ড. মোহাম্মদ আরশাদ-উল-আলম জানান, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত দুটি আইড় মাছের প্রজাতি জানা ছিল। গুজি আইড় ও তল্লা আইড় নামে পরিচিত এই ক্যাটফিশ প্রজাতি দুটির বৈজ্ঞানিক নাম যথাক্রমে Sperata aor (Hamilton 1822), ও Sperata seenghala (Skyes, 1839)। এই দুটি আইড়ের পপুলেশন মোটামুটিভাবে সমগ্র বাংলাদেশে বিস্তৃত থাকলেও Sperata aor-এর পপুলেশন কম।
IUCN Red List of Bangladesh অনুসারে এই দুই প্রজাতি ভালনারেবল ক্যাটাগরিতে থ্রেটেন্ড প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। Sperata aor-এর তুলনায় Sperata seenghala বেশ বড় হয়। কাপ্তাই হ্রদসহ চট্টগ্রামের নদীগুলোতে এই দুই প্রজাতির আবাস থাকলেও IUCN Red List of Bangladesh 2015-এ তা উল্লেখ নেই। সিলেট অঞ্চলে এই দুটি আইড় যথাক্রমে বোচা কাঁটা ও লম্বা কাঁটা নামে পরিচিত। বর্তমানে সিলেট বিভাগের হাওরগুলোতে তৃতীয় প্রজাতির আইড়ের উপস্থিতি জানা গেল।
তুন্ড, অ্যাডিপোজ ফিন (দ্বিতীয় পৃষ্ঠ পাখনা), অক্সিপিটাল প্রসেস, এপিনিউরাল শিল্ড ইত্যাদির গঠন এবং দেহের তুলনামূলক দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা এই তিন প্রজাতির আইড়ের পার্থক্য নির্দেশ করে। নতুন আইড় Sperata aorella-এর দেহ খাটো ও মোটা, তুন্ড বা চোখের সম্মুখ অংশ অপেক্ষাকৃত লম্বা, অক্সিপিটাল স্পাইন দীর্ঘ, এপিনিউরাল শিল্ড সরু, অ্যাডিপোজ ফিন খাটো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মৎস্য গবেষক সুজন দত্ত জানালেন, আইড় মাছের এই প্রজাতির রেকর্ড আগে ছিল না। ডিএনএ বারকোডিংয়ের মাধ্যমে নতুন আইড় প্রজাতি Sperata aorella-এর প্রজাতি শনাক্তকরণের কাজ শেষ প্রায়। কিছু কাজ এখনো চলমান।