রপ্তানি পোশাকের লেবেলে থাকবে বাংলা বর্ণমালা

রপ্তানি পোশাকের লেবেলে থাকবে বাংলা বর্ণমালা
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে রপ্তানি হয়ে আসছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক। একক দেশ হিসেবে বিশ্ববাজারে যার অংশীদারত্ব প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ এবং শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে দ্বিতীয়। পোশাক রপ্তানিতে প্রায় সাড়ে চার দশকের এই পথচলায় বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ করা প্রতিটি পোশাকের গায়ে সাঁটানো লেবেলে ইংরেজিতেই লেখা থাকত ‘মেইড ইন বাংলাদেশ।’ সম্প্রতি বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা বিশ্ববাজারে তার ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। রপ্তানি হওয়া পোশাকের লেবেলে ইংরেজিতে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখার পরিবর্তে প্রথমবারের মতো বাংলা বর্ণমালায় ‘বাংলাদেশে তৈরি’ লেখা লেবেল ব্যবহার করেছেন। উইজডম অ্যাটায়ার্স লিমিটেড নামের একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এ নজির স্থাপন করেছে।

পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিজিএমইএ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

শনিবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর নিজস্ব কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. ফারুক হাসান এমন তথ্য দিয়ে আরও জানান, একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলা বর্ণমালায় ‘বাংলাদেশে তৈরি’ লেখা লেবেল সাঁটিয়ে পোশাকের রপ্তানি যাত্রা শুরু হলো। ভবিষ্যতে দেশের সব রপ্তানি পোশাকের লেবেল থাকবে বাংলা বর্ণমালায়। এ লক্ষ্যে আগামী ১ জানুয়ারি, ২০২৪ থেকে বাংলাদেশে উৎপাদিত সব পোশাক পণ্যের লেবেলে বাংলা বর্ণমালায় ‘বাংলাদেশে তৈরি’ লেখাটির মুদ্রণ নিশ্চিত করতে কাজ করছে বিজিএমইএ। এটি করা সম্ভব হলে বাংলাদেশের গর্বের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, বাংলা ভাষা সম্পর্কে বিশ্ববাসী সম্যক ধারণা পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে এই অনন্য নজির স্থাপন করায় বিজিএমইএর পক্ষ থেকে উইজডম অ্যাটায়ার্সের মালিক ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে অভিনন্দনও জানানো হয়।

এ সময় পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান জানান, পোশাকের বিশ্ববাজারে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। দেশে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ক্রেতার সক্ষমতায় চিড় ধরিয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রেতারা পোশাকের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছেন। আবার যা রপ্তানি হচ্ছে, তার দাম পাওয়া যাচ্ছে কম। দামও মিলছে অনেক দেরিতে। আবার ক্রেতার রুচিবোধে পরিবর্তন এসেছে। ক্রেতারা ছাড়কৃত পোশাকে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বেশি। কিন্তু উৎপাদন খরচ বাড়ায় এবং সে অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনাগত সমন্বয় করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

বিজিএমইএ সভাপতি দাবি করেন, টাকার অঙ্কে বা মূল্যভিত্তিক রপ্তানি বাড়লেও পরিমাণের দিক থেকে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না। বরং আগের বছরের তুলনায় পোশাক পণ্য রপ্তানি আয় কমেছে। আমাদের শঙ্কা হচ্ছে, আগামী মাস থেকে মূল্যভিত্তিক রপ্তানি আয়ও কমে যেতে পারে।

ফারুক হাসান বলেন, রপ্তানি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী পোশাকশিল্প উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিতে বলেছেন। সরকারের নীতিগত সহায়তা পেলে পোশাক পণ্যের বহুমুখীকরণেও বিশেষ করে নন-কটন খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

তিনি টেকনোলজি ব্যবহার ও প্রসেস আপগ্রেডেশনের মাধ্যমে ঝুট রিসাইকেলিং শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রক্রিয়া, পণ্য ও সেবাকে শুল্ক ও ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখারও প্রস্তাব করেন।

এ সময় বিজিএমইএর পরিচালনা পর্ষদ সদস্যসহ খাত-সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com