
টানা পাঁচ মাস ধারাবাহিকভাবে কমলেও ফেব্রুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশে। গত জানুয়ারি মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তবে বাড়তি মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায় রয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
গতকাল রোববার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ফেব্রুয়ারি মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি বাড়লেও তা অতিরিক্ত না। পাকিস্তানের মতো উচ্চ মূল্যস্ফীতি হয়নি। মূল্যস্ফীতি অস্বস্তিকর নয়। আমাদের দেশে এখনো মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ধারাবাহিকভাবে কমার পরে মূল্যস্ফীতি কেন বাড়ল—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়া-কমা
নিয়ে মূল্যস্ফীতির গড় হিসাব হয়। গড় হিসাবে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। একই সঙ্গে কিছু পণ্যের দামও কমেছে। তিনি বলেন, রমজানের চাহিদার কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। এসব কারণেই গড় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে বলে জানান তিনি।
বিবিএসের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, সার্বিক মূল্যস্ফীতি বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও। তবে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি আগের মতোই রয়েছে।
বিবিএসের দেওয়া মূল্যস্ফীতির হিসাবে দেখা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির সঙ্গে বেড়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হারও। জানুয়ারি মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা ফেব্রুয়ারি মাসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার কমেছে, তবে এই কমার হার মাত্র দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
অন্যদিকে ফেব্রুয়ারি মাসেও শহরের তুলনায় গ্রামে মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি। ফেব্রুয়ারি মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যেখানে গ্রামে এই হার হিসাব করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। সার্বিক মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় দিক থেকেই গ্রামে মূল্যস্ফীতির হার বেশি হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রামে খাদ্যে ৮ দশমিক ১৯ ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এ সময়ে শহরে খাদ্য পণ্যে ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি।
এর আগে সম্প্রতি দেশে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি ছিল গত আগস্টে। ওই মাসে মূল্যস্ফীতি বেড়ে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে উঠেছিল। মূল্যস্ফীতির ওই হার ছিল গত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছরের আগস্টের পর ধারাবাহিকভাবে আবার কমতে থাকে মূল্যস্ফীতির হার। এরপর প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতি একটু একটু করে কমেছে বলে বিবিএসের তথ্যে তুলে ধরা হয়। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ২০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল।