সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি : আজ ভোট গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি : আজ ভোট গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা
ছবি : সংগৃহীত

পূর্বঘোষিত তপশিল অনুযায়ী আজ বুধবার থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুদিনব্যাপী ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু সেই ভোট নিয়ে শুরু হয়েছে বড় ধরনের জটিলতা। আজ ওই ভোট অনুষ্ঠিত হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে আশঙ্কা। ভোটের আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রায় ৩ হাজার ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান পদত্যাগ করার পর সমিতির বিএনপি ও আওয়ামী সমর্থক নেতারা পৃথক দুজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করেছেন।

এ অবস্থায় আজ এই ভোট কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, কার পরিচালনায় ভোট হবে—এমন অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মেলেনি। যদিও আওয়ামী সমর্থক আইনজীবী নেতারা জানিয়েছেন, ভোট আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকেই অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতারা জানিয়েছেন, আজ ৯টার মধ্যে আশা করি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। প্রধান বিচারপতি সুষ্ঠু সমাধান করে দেন। এদিকে বিষয়টি নিয়ে কোনো সমাধান না হলে এই নির্বাচন কেন্দ্র করে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৩-২৪ সেশনের কার্যকরী কমিটির নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হয়। ১৫ ও ১৬ মার্চ এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কার্যকরী কমিটির সভাপতি পদে একটি, সহসভাপতি পদে দুটি, সম্পাদক পদে একটি, কোষাধ্যক্ষ পদে একটি, সহসম্পাদক পদে দুটি এবং কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে সাতটি পদসহ মোট ১৪টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন নিয়ে শুরুতেই বিভেদ দেখা দেয়। পরে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন পরিচালনার জন্য জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন। তবে একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ভোট গণনার মেশিন ব্যবহার করতে চাইলে বর্তমান সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল তাতে বাধা দেন। তিনি ব্যালট পেপারে ভোটের পক্ষে মত দেন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে মনসুরুল হক পদত্যাগ করেন।

এ অবস্থায় গতকাল বিএনপি ও আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা ফের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন। সমিতির আওয়ামী ফোরামের নেতারা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নিয়োগ করে নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, বার সমিতির সাবেক সহসভাপতি এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান করে একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেন। বিষয়টি নিয়ে দিনভর দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বিভক্তি দেওয়া যায়। রাতে কে বা কারা প্রায় ৩ হাজার ব্যালট পেপার ছিঁড়ে ফেলেন। এ বিষয়টি নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করতে থাকে দুপক্ষ। ফলে আজ সকালে ভোট গ্রহণ শুরু হবে কি না, তা নিয়ে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে।

জানতে চাওয়া হলে সমিতির বর্তমান সভাপতি ও আওয়ামী সমর্থক সাদা প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন ফকির কালবেলাকে বলেন, বিএনপি সমর্থকরা ব্যালট পেপার ছিনতাই করেছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। তারপরও বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান পদত্যাগের পর আমি সভাপতি ও সম্পাদক মিলে একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেছি। আইন অনুযায়ী এই কমিটি করেছি।

অন্যদিকে, বিএনপি ফোরামের আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল বলেন, আওয়ামী সমর্থকরা নিজেরা নিজেরা সিনক্রিয়েট করে প্রায় ৩ হাজার ব্যালট ছিঁড়ে ফেলেছে। ধারণা করছি, তারা তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে এটা করেছে। আমরা সকাল ৯টা পর্যন্ত দেখব, আমাদের অভিভাবক প্রধান বিচারপতি কী সিদ্ধান্ত নেন। ইতোমধ্যে আমরা একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেছি। আশা করছি, সকাল ৯টার মধ্যে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। এরপর ১০টা থেকে ভোট হবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com