নাইকো মামলায় চার্জ গঠন আদেশ বাতিলে আবেদন খালেদা জিয়ার

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।পুরোনো ছবি

নাইকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়। আবেদন করার বিষয়টি জানিয়ে পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল কালবেলাকে বলেন, নাইকো মামলায় যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। অভিযোগ গঠনের ১৯ মার্চের আদেশ বাতিল চাওয়া হয়েছে আবেদনে। রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে বিবাদী করা হয়েছে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুযায়ী এখন আবেদনটি শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে। গত ১৯ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান। এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ২৩ মে দিন ধার্য করা আছে। বিচার শুরু হওয়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ব্যবসায়ী সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। আসামিদের মধ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

জানা যায়, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার নামে মামলা করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। ২০০৮ সালের ৫ মে নাইকো মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুটি মামলা হয়। একটি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে, অন্যটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা নাইকো মামলাটি ২০০৯ সালে হাইকোর্টে বাতিল হয়।

খালেদা জিয়া এরই মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। আর একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিনি ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় দুই বছর কারাগারে ছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে দুটি শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ। তখন করোনা মহামারির মধ্যে তার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর থেকে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস অন্তর অন্তর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com