যৌতুকের বলি বিচারপতির ভাতিজি

ফাতেমা নাসরিন।
ফাতেমা নাসরিন।ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৯ বছরের দাম্পত্য জীবন ফাতেমা নাসরিন ও মির্জা সাখাওয়াত হোসেনের। ১৭ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে তাদের। তবে বিয়ের পর থেকে সাখাওয়াত বিভিন্ন সময় ফাতেমার কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। দাবি না মানলে করতেন নির্যাতন। শুধু সংসার করবেন বলে মুখ বুজে সহ্য করেছেন ফাতেমা। তবু প্রাণ বাঁচাতে পারলেন না স্বামীর হাত থেকে। নির্যাতিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তিনি। এর পরই অভিযুক্ত স্বামী সাখাওয়াতকে গ্রেপ্তার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। ফাতেমা হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের ভাতিজি।

গতকাল শনিবার সকালে দেখা যায়, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গের সামনে স্বজনরা শোকে মাতম করছেন। গত শুক্রবার রাত ১টার দিকে আগারগাঁও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফাতেমা নাসরিন। এ ঘটনায় তার বড় বোন আরজিনা বেগম মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় মূল অভিযুক্ত করা হয় সাখাওয়াতকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাখাওয়াত বিভিন্ন সময় ফাতেমার কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। ঠাকুরগাঁওয়ের পৈতৃক বাড়ি বিক্রি করে ১ কোটি টাকা এনে দিতে বলতেন স্ত্রীকে। কিন্তু ওই বাড়িতে আরও অনেকের অংশ রয়েছে; তাই একা বিক্রি করা যাবে না বলে ফাতেমা স্বামীকে জানান।

গত জানুয়ারিতে পঞ্চগড় সদর থানায় নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন ফাতেমা। ওই মামলায় সাখাওয়াত গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন। পরে তিনি জামিনে বের হয়ে আবারও যৌতুকের টাকা জন্য ফাতেমাকে চাপ দিতে থাকেন। সর্বশেষ গত ৮ মার্চ যৌতুকের টাকার দাবিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় সাখাওয়াত বঁটি ও মসলা বাটার কাঠের বাটলা দিয়ে ফাতেমার মাথা থেঁতলে দেন। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করেন। স্ত্রীকে দা দিয়ে জবাই করতে উদ্যত হলে তাদের মেয়ে এসে বাধা দেন। পরে ফাতেমাকে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি মারা যান।

মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ফাতেমার স্বামীকে আমরা এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com