ইভিএমের ধীরগতিতে ভোটারদের ভোগান্তি

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বৃহস্পতিবার পুরুষের পাশাপাশি নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বৃহস্পতিবার পুরুষের পাশাপাশি নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।ছবি : নাসির উদ্দিন

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণ হয়েছে। তবে বিপত্তি ঘটিয়েছে ভোট দেওয়ার মাধ্যম ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)। এই মেশিনের ধীরগতিতে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে ভোটারদের। শুধু তাই নয়, বেশকিছু কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন হ্যাং হয়ে যাওয়া ও ভোটারের আঙুলের ছাপ না মেলার কারণে জটিলতা তৈরি হয়। এসব কারণে প্রচণ্ড রোদের মধ্যেও ভোটকেন্দ্রে বুথের বাইরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি, গাজীপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সালনা নাসির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মহিলা ভোটকেন্দ্র, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি-প্রগতি) প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র এবং গাছা থানার কলমেশ্বর বেগম রোকেয়া সরণি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র ঘুরে ভোটের এ চিত্র দেখা গেছে। এ সময় ভোটারদের তীব্র বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায়।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তখনো ভোটার উপস্থিতি খুবই কম। যে কয়েকজন এসেছেন, তারাও পড়েছেন ধীরগতির জালে। কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, এটি মহিলা ভোটকেন্দ্র। ভোটারদের উপস্থিতি খুব একটা চোখে পড়েনি। তবে মহিলা ও বয়স্করা ইভিএমের ব্যবহার ঠিকমতো জানেন না বলে ভোট প্রদানে বিলম্ব হয়।

এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আলমগীর জানান, তার কেন্দ্রে মোট ২৪০৯ জন ভোটার। ভোটার পারুল আক্তার বলেন, অনেকদিন পর ভোট দিতে এসেছি। খুশি লাগছে।

গাজীপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার প্রায় আড়াইহাজার। কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কয়েকজন ভোটার জানান, নারীদের হাতে মেহেদি ও মাথায় তেল দেওয়ার কারণে হাতের ফিঙ্গার মেলে না। অনেক নারী বাসায় মসলা বাটার কারণেও আঙুলের ছাপ ক্ষয়ে গেছে। তাদেরও ফিঙ্গার মেলাতে সমস্যা হয়। তা ছাড়া অধিকাংশ ভোটার জানেন না ইভিএমে কীভাবে ভোট দিতে হবে? এসব কারণেও ভোট দিতে দেরি হয়। ভোটার শাহ আলম বলেন, কীভাবে ভোট দিতে হয়, ঠিকমতো বুঝি না। এ জন্য অফিসাররা বুঝাইয়া দেন। এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুল কাদের বাবু বলেন, তার কেন্দ্রে প্রায় আড়াইহাজার ভোট। সাতটি বুথে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে।

সালনা নাসির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মহিলা ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ওয়াহিদুল আবরার জানান, মোট নারী ভোটার ৩১৭৭ জন। মোট বুথ ৯। ভোটাররা মেশিনে ভোট দিতে জানে না। তা ছাড়া মেশিনে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ভোট গ্রহণে দেরি হয়। সালনা নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার তাহমিনা সুলতানা বলেন, তিন ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে থেকে ক্লান্ত। তিনি জানান, দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে না পেরে একজন সন্তানসম্ভবা ভোটার বাড়িতে ফিরে গেছেন।

সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজের মহিলা ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আবুল মোতালেব বলেন, ভোট কীভাবে দিতে হবে, সে বিষয়ে জ্ঞান না থাকার কারণেই মূলত ধীরে হয় ভোট গ্রহণ। বয়সে তরুণদের ভোট দিতে সময় না লাগলেও নারী ও বয়সীদের ভোট দিতে একটু বেশিই সময় লেগেছে।

জানতে চাইলে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার শাহজাহান শিকদার কালবেলাকে বলেন, ইভিএম মেশিন ঠিক আছে। তবে বয়স্ক লোকজন অনেকে মেশিনের ব্যবহার জানেন না।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com