
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন নীতিমালা প্রণয়নে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সাড়া পাচ্ছে না স্থানীয় সরকার মন্ত্রাণালয়। এ বিষয়ে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো পরামর্শ বা মতামত দেয়নি ধর্ম মন্ত্রণালয়। ফলে প্রস্তাবিত নীতিমালার খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এমন অনীহায় ক্ষোভ জানিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। ফলে এ বিষয়ে মতামত বা সিদ্ধান্ত দিতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে আবারও তাগাদা দেওয়া হয়।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ১৩তম বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ।
বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. শাহে আলম বলেন, যত্রতত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন/নির্মাণ না করে স্থানীয় সরকারের সুনির্দিষ্ট একটা নীতিমালার আলোকে উপযুক্ত স্থানে সেগুলো হওয়া বাঞ্ছনীয়। এ সময় ‘কবরস্থান স্থাপন ও শ্মশানঘাট নির্মাণ বা উন্নয়নের বিষয়ে’ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, রাস্তার পাশে কবরস্থান স্থাপন/নির্মাণ করার ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা জরুরি।
বৈঠকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, অন্যান্য অবকাঠামোর পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যত্রতত্র স্থাপন করায় আমাদের বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়। ফলে এটি নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, স্থানীয় প্রশাসন একটি কমিটি করে তার মাধ্যমে এসব কাজ করলে ভালো হয়।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, কবরস্থান স্থাপন ও শশ্মানঘাট নির্মাণ বা উন্নয়নের সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত। আর সেজন্যই তাদের মতামত চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাদের কোনো মতামত পাওয়া যায়নি। তাই আবারও তাগাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংসদীয় কমিটির সূত্রে জানা গেছে, এর আগে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান ও শ্মশান নির্মাণ করা যাবে না—এমন বিধান রেখে একটি নীতিমালা করার প্রস্তাব তৈরি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে এটি এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি।
সূত্র আরও জানায়, ২০২১ সালের ২৫ মার্চ অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংসদীয় কমিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ এবং কবরস্থান ও শ্মশান স্থাপনের বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি কমিটি গঠন করে। একই বছর ১৯ আগস্ট কমিটি তাদের ৯ দফা প্রস্তাব দাখিল করে। আর বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হলে তারা মতামত দেয়নি। ফলে এবারও ধর্ম মন্ত্রণালয়কে তাগিদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সংসদীয় কমিটি।
এ ব্যাপারে কমিটির সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, নীতিমালা চূড়ান্ত করতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মতামত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আমরা তাদের মতামতের অপেক্ষায় আছি।