
আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী—এটা মোটামুটি নিশ্চিত। তার পরও এ বিএনপি নেতার প্রার্থী হওয়া নিয়ে যেটুকু জল্পনা-কল্পনা জিইয়ে রয়েছে, তারও অবসান হতে যাচ্ছে আজ শনিবার। আজ সিলেট নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে এক সমাবেশে প্রার্থী না হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন এ সিটির গত দুইবারের মেয়র আরিফুল হক—এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময়ও প্রার্থী না হওয়ার বিষয়ে আভাস দিয়েছেন তিনি। এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি সবসময় সিলেটের জনগণের পাশে ছিলাম, যে অবস্থানেই থাকি না কেন, প্রিয় সিলেটের জনগণের পাশেই থাকব।’
রেজিস্ট্রারি মাঠের জনসভায় কী ঘোষণা আসতে পারে, জানতে চাইলে মেয়র আরিফ বলেন, ‘আমি একটি রাজনৈতিক দল করি, সেটি বিএনপি। দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। এবার যদি আমাকে নির্বাচন করতে হয়, তবে দল ছাড়তে হবে। দলের আদর্শ থেকে সরে আসতে হবে। আর দল করতে হলে নির্বাচন ত্যাগ করতে হবে। আমি কী করব—সেটিই শনিবার বলব।’
সিলেট সিটির নির্বাচনী তপশিল ঘোষণার আগে গুঞ্জন ছিল—দল থেকে ভোটে অংশ নেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, নাগরিক সমাজের ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন আরিফুল হক চৌধুরী। এর মধ্যেই ২ এপ্রিল হঠাৎ লন্ডনে যান তিনি। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে জানান, তিনি একটা সিগন্যাল পেয়েছেন; তবে সেটা রেড না গ্রিন পরে জানাবেন। দেশে আসেন ১৭ এপ্রিল। এরপর বললেন, প্রার্থিতার বিষয়ে জানাবেন ঈদের পর। ১ মে শ্রমিক দিবসের সমাবেশে মেয়র আরিফ বলেন, সারা দেশে বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও সিলেটের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আমি প্রার্থী হলে কেন হব, তা ২০ মে জনসভা করে সবার সামনে ব্যাখ্যা করব। তার এ বক্তব্যে ফের শুরু হয় তোলপাড়।
অবশেষে সমাবেশের অনুমতি
এদিকে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশকে চিঠি দেন আরিফুল হক চৌধুরী। কিন্তু গতকাল শুক্রবার সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে আরিফকে রেজিস্ট্রারি মাঠে সমাবেশ না করার অনুরোধ করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ মেয়র বিকেলে অনুসারীদের নিয়ে রেজিস্ট্রারি মাঠের বন্ধ ফটকের সামনে বসে পড়েন। সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার আগ পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
এ সময় মেয়র আরিফ বলেন, ‘সমাবেশের জন্য তিন দিন আগে পুলিশকে চিঠি দিয়েছি। টিভি-পত্রপত্রিকায় প্রচার চালিয়েছি, মাইকিং করেছি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের সমাবেশ না। আমি আমার অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য মহানগরবাসীকে ডেকেছি।’ প্রায় ঘণ্টাখানেক মাঠের সামনের সড়কে অবস্থানের পর পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর খুলে দেওয়া হয় রেজিস্ট্রারি মাঠের বন্ধ ফটক। ডেকোরেটর্সের সরঞ্জাম প্রবেশ করে মাঠে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার সুদীপ দাস বলেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে, এমন শঙ্কায় আরিফুল হক চৌধুরীকে সমাবেশ না করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। তবে পরে মেয়রের অনুরোধে তাকে শনিবার সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।