রুবলে বাণিজ্য-লেনদেন নিয়ে ফের আলোচনা
বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে সহজ ব্যাংকিং এবং দেশটির ব্যাংকে তাদের মুদ্রা রুবলে হিসাব খুলে বাণিজ্য ও আর্থিক লেনদেনের উপায় খুঁজতে আলোচনা শুরু করেছেন দু’দেশের কর্মকর্তারা। বাণিজ্য, অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক ঢাকা-মস্কো আন্তঃসরকার কমিশনের চতুর্থ অধিবেশনের প্রথম দিনে গতকাল সোমবার এ বিষয়ে কথা বলেছে দুই দেশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিকল্প ও নিরাপদ লেনদেনের পদ্ধতি খুঁজে বের করাসহ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাশিয়ার সঙ্গে তিন দিনব্যাপী দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শুরু করছে বাংলাদেশ। এই ভার্চুয়াল বৈঠকে বাণিজ্য, পররাষ্ট্র, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান। রাশিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাশিয়া ফেডারেশনের ফেডারেল এজেন্সি ফর ফিশারিজের প্রধান ইলিয়া ভি শেসতাকভ। অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি সহযোগিতা সম্প্রসারণে ২০১৭ সালের ১ মার্চ বাংলাদেশ-রাশিয়া আন্তঃসরকার কমিশন গঠন করা হয়।
জানা গেছে, গতকাল উদ্বোধনী দিনে আর্থিক খাত নিয়ে আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে ব্যাংক, জ্বালানি ও ভূতাত্ত্বিক অনুসন্ধান, পারমাণবিক শক্তি এবং বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক খাতের সহযোগিতা।
সূত্র জানায়, ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর বেলজিয়াম থেকে পরিচালিত আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা সুইফটে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়। সুইফটের বিকল্প হিসেবে রাশিয়া তখন ‘কারেন্সি সোয়াপ’ পদ্ধতিতে লেনদেন নিষ্পত্তির প্রস্তাব দিলেও তা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিবেচনায় নেয়নি। এদিকে দেশটির সঙ্গে আধুনিক ব্যাংকিং যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন ব্যাহত হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশি পণ্যের অন্যতম বড় বাজার রাশিয়া। ডলার সংকটের কারণে সমস্যা আরও বেড়েছে। এদিকে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওনা পরিশোধ নিয়েও জটিলতার মধ্যে পড়েছে বাংলাদেশ। তাই ঢাকা-মস্কো লেনদেন অব্যাহত রাখতে বিকল্প উপায় নিয়ে আলোচনায় পার করেছে প্রথম দিন। তবে প্রথম দিনের আলোচনায় নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন রুশ জাহাজ ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।
সূত্র আরও জানায়, আজ মঙ্গলবার অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন রেল ও কৃষি যন্ত্রপাতি, সার, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে রাশিয়ার বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হবে। যৌথ সার কারখানা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্রকল্প স্থাপন, জ্বালানি পরিশোধন কারখানা স্থাপন, চামড়া ও চামড়াজাত কারখানা, ওষুধ, পর্যটন খাতে বিনিয়োগ, কৃষি ও প্রাণিসম্পদ এবং কৃষি খাতের জন্য গবেষণাগার তৈরির সহযোগিতা এবং সাইবার নিরাপত্তা আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। বুধবার সমাপনী দিনে আলোচনার আলোকে প্রটোকল সই হওয়ার কথা রয়েছে।