হিন্দু আইন সংস্কার ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে সমাবেশ-ঝাড়ু মিছিল

হিন্দু আইন সংস্কার ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঝাড়ু মিছিল।
হিন্দু আইন সংস্কার ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঝাড়ু মিছিল।ছবি : কালবেলা

সনাতন শাস্ত্রীয় আইন পরিবর্তনের ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, ঝাড়ু মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসব কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র মহাসংঘ, বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনসহ কয়েকটি সংগঠন।

হিন্দু আইনে নারী, প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘বৈষম্য’ নিরসনের দাবি বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের। তবে শুরু থেকেই এ দাবিটিকে অযোক্তিক বলে আসছে হিন্দুদের বিভিন্ন সংগঠন। গতকাল পরিষদের সংবাদ সম্মেলনের সময়ও প্রেস ক্লাবের সামনে এ আইন সংস্কারের বিরোধিতা করে মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল করে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন সংগঠন।

সনাতন আইন পরিবর্তনের চেষ্টাকে দেশ হিন্দুশূন্য করার কৌশল অভিযোগ করে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেন, সনাতনী সমাজে বিয়ে কোনো চুক্তি নয়, এটা একটি পবিত্র ব্রত। এখানে দেবতাকে সাক্ষী রেখে পবিত্র দেবমন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে বর-কনে একাত্ম হয়ে যান। তাই স্ত্রীকে বলা হয়, সহধর্মিণী বা অর্ধাঙ্গিনী। তারা পরিবারের সম্পদ-সম্পত্তিও যৌথভাবেই ভোগ করে থাকেন। যুগ যুগ ধরে পবিত্র শাস্ত্রীর বিধানের ঐশীবন্ধনে সনাতনী সমাজের পরিবারগুলো শান্তিময়-ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় চলমান। হিন্দু সম্প্রদায়ের নারীরা দেবীর আসনে অধিষ্টিত এবং পারিবারিকভাবে যথেষ্ট সুরক্ষিত। কিছু এনজিওসহ একটি বিশেষ মহলের কারসাজিতে তা বিনষ্ট করার এবং বাংলাদেশকে অচিরেই হিন্দুশূন্য করার ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে। অনতিবিলম্বে এই আইন পরিবর্তনের প্রচেষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র মহাসংঘের পীযূষ দাস বলেন, আইনটির পরিবর্তন করা হলে দেশের হিন্দু নারীরা পারিবারিকভাবে সুরক্ষা হারাবে, একসময় ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য হবে। তাই সরকারের কাছে এই আইন বন্ধের দাবি জানাই।

ভক্ত সংঘ সোসাইটি বাংলাদেশের পক্ষে অনিল পাল বলেন, হিন্দু আইন সনাতন শাস্ত্রীয় আইন। এই আইন স্বয়ং ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত আইন। এই আইনকে সংস্কারের নামে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পারিবারিক সুরক্ষা ভেঙে দিতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সনাতন কল্যাণ জোটের পক্ষে শ্যামল ঘোষ বলেন, হিন্দু আইন সংস্কারের নামে বিবাহ বিচ্ছেদ চালুসহ পারিবারিকভাবে সুরক্ষিত হিন্দু নারীদের রাস্তায় নামাতে বাধ্য করতে দেশের বিতর্কিত কতিপয় এনজিও, কিছু দুষ্কৃতকারী ষড়যন্ত্র করছে।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব হিন্দু ফেডারেশনের সভাপতি বরুন চন্দ্র সরকার ও মহাসচিব শ্যামল কান্তি নাগ প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com