চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কোন্দলেই দুই বছরের কমিটি পার করেছে পাঁচ বছর। এরই মধ্যে কোনো ধরনের থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়নি, হয়েছে নিজ নিজ ওয়ার্ডে শীর্ষ নেতাদের সমর্থিত গ্রুপ-উপগ্রুপ। দলীয় নানা কর্মসূচি ঘিরে নামে মাত্র করা হচ্ছে কমিটির বিভিন্ন নেতার পৃথক সভা-সমাবেশ। আদৌ নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি নতুন করে গঠন হবে কি না, সেই প্রশ্ন সংগঠনের দায়িত্বশীল নেতা ও তৃণমূলের। তবে দ্রুত নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি গঠন না হলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, ক্ষোভসহ সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দলীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই এইচ এম রাশেদ খানকে সভাপতি এবং বেলায়েত হোসেন বুলুকে সাধারণ সম্পাদক করে সাতজনের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শফিউল বারী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল। এর প্রায় দেড় বছর পর ১৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল। এরপর ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশের পরপরই নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হওয়ার কথা থাকলেও কোনো ধরনের প্রক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। এই কমিটি গঠনের শুরুর দিকে দায়িত্বশীলদের মধ্যে কিছুটা মতবিরোধ দেখা দিলেও কয়েক মাস পর থেকেই শুরু হয় সেই বিরোধের চূড়ান্ত প্রতিফলন। ১৭১ সদস্যের নতুন কমিটি গঠনের পরও সাংগঠনিক কোনো কর্মসূচিতে সেই কমিটির সদস্যরা এক হয়ে উপস্থিত হননি। ধীরে ধীরে সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ দায়িত্বশীল নেতারা পৃথক কর্মসূচি পালন করা শুরু করেন। এতে কমিটির কিছু নেতা বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেই দায় সেরেছেন নামে মাত্র। নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ, সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, সিনিয়র সহসভাপতি আসাদুজ্জামান দিদার, সহসভাপতি তোফাজ্জল হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী মূর্তজা খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দীন নাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়াসহ আরও অনেকের পৃথক গ্রুপ-উপগ্রুপ তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। তাদের নিজস্ব বলয় নিয়ে সংগঠনের মিছিল-মিটিংও হচ্ছে বিভিন্ন সময়।
চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু কালবেলাকে বলেন, কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে, কর্মিসভাও হয়েছে। নতুন কমিটি সবাই চান। তবে সেটি কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত। একটি কমিটিতে ১৭১ সদস্য থাকলেও অসুস্থতাসহ নানা কারণে সবাই বা শতভাগ উপস্থিত থাকতে পারেন না। পৃথক নয়, একই ব্যানারে একসঙ্গে দলীয় কর্মসূচি ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে আসছি। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দীন নাহিদ কালবেলাকে বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ কোনো কিছু দিয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না। কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সংগঠনের একটি ধারাবাহিক কাজ। ২৬ জুলাই কমিটির পাঁচ বছর পূর্ণ হবে। সংগঠনের কর্মিসভার সাত মাস পার হওয়ার পর কমিটি না দেওয়া দুঃখজনক এবং আমাদের প্রতি অবমূল্যায়নের বহিঃপ্রকাশ।
কমিটির বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল আহসানকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তা রিসিভ হয়নি। পরে এসএমএস দেওয়া হয়, তাতেও সাড়া মেলেনি।