কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান। যেখানে প্রতিবছর আল্লাহর দিদার লাভের আশায় দেশ-বিদেশ থেকে আগত লাখো মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করেন। এবারও ১৯৬তম ঈদুল ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া। জামাতকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে মাঠের দাগ কাটা, মেহরাব ও দেয়ালে চুনকাম করা, ওজুখানা তৈরি, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
ঈদের দিন সকাল ১০টায় জামাতে ইমামতি করবেন বাংলাদেশ ইসলাহুল মুসলেমিন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। জামাত নির্বিঘ্ন করতে থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, ২০১৬ সালে দুজন পুলিশ সদস্যসহ মোট তিনজন এখানে জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছিলেন। তখন থেকে আমরা সবসময় বাড়তি ব্যবস্থা গ্রহণ করে আসছি। এবারও আগের চেয়ে দেড়গুণ বেশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে শোলাকিয়ায়। পুলিশের চারটি স্থাপনা পেরিয়ে ঈদগাহ ময়দানে ঢুকতে হবে। মাঠে ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে ছয়টি। এর মধ্যে র্যাব ব্যবহার করবে দুটি আর চারটি করবে পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, সিসি ক্যামেরা দিয়ে পুরো মাঠ নজরদারি করা হবে। বাইনোকুলার, চারটি ড্রোন ক্যামেরা, ছয়টি ভিডিও ক্যামেরা থাকবে। পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম থাকবে। বোম ডিসপোজাল টিম ঢাকা থেকে আসবে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, নিরাপত্তা জোরদারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার মোতায়ন থাকবে। জেলা প্রশাসনের ১০ ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে শহরে জানবাহন চলাচল সীমিত করা হবে। মাঠে শুধু জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে আসাতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ ও ভৈরব-কিশোরগঞ্জ রোডে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে। ময়মনসিংহ থেকে ভোর পৌনে ৬টা ও ভৈরব থেকে ভোর ৬টায় কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে ট্রেন ছেড়ে আসবে। নামাজ শেষে যথারীতি দুটি ট্রেন ছেড়ে যাবে। নারীদের জন্য সূর্যবালা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত ঈদের জামাত উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ জামাত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।