‘রমজানের আগে থেকে শুরু করে এতদিন পর্যন্ত ব্যবসা করে যা লাভ করেছি, তা সব জমিয়েছি। শুক্রবারে এসব টাকা দিয়ে নতুন মালপত্র দোকানে তুলেছি। শনিবার ভোরে নামাজ পড়ে ঘুমাতে গেলাম। সকালে খবর পেলাম আগুন লেগেছে। খবর পেয়েই ছুটে এসেছি। এসে দেখি আমার দোকান জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসকে বলেছি কিছু করেন। কিছুই করতে পারেনি। চোখের সামনে দেখলাম সব পুড়ে যেতে। এতদিন ধরে এই ঈদের মৌসুমের ব্যবসা নিয়ে যা স্বপ্ন দেখেছি, তা চোখের সামনে পুড়ে যেতে দেখেছি। আমার সব শেষ। কোনো মালপত্র আমি রক্ষা করতে পারিনি। এখন আমার সামনে কী হবে, আমি কিছুই জানি না।’ নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগার পরদিন নিজের পুড়ে যাওয়া দোকানের সামনে এভাবেই কেঁদে কেঁদে বিলাপ করছিলেন মো. মুজিবর মিয়া। নিউ সুপার মার্কেটের নিচতলার ৫০৯ নম্বর দোকান মেরাজ মাহি বস্ত্রালয়ের মালিক তিনি। মেয়েদের থ্রি পিস ও অন্যান্য ড্রেসের ব্যবসা করতেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মুজিবর মিয়া বলেন, শুক্রবার ভালো ব্যবসা হয়েছে। রাতে বাসায় গেলাম। সকালে নামাজ পড়ে ঘুমাতে যাওয়ার পর শুনলাম নিউ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় আগুন লেগেছে। আমি, আমার স্ত্রী আর দুই ছেলে দৌড়ে এলাম। এসে দেখি নিচতলায় আমার সব মালপত্র পুড়ছে। ফায়ার সার্ভিস পানি দিচ্ছিল, একটা সময় পানি শেষ হয়ে গেল। চোখের সামনে দেখেছি সব পুড়ে যেতে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ক্যাশ টাকা যা ছিল, সেটা সবটা দিয়ে নতুন মাল কিনেছি। কারণ, স্বপ্ন ছিল ঈদে ভালো ব্যবসা হবে। আবার টাকা ক্যাশ করতে পারব। এখন তো সবই গেল। এখন আল্লাহ আমাকে যেন ধৈর্য ধরার তৌফিক দেন। আমি তো কারও কাছে হাত পাততেও পারব না। কেউ সাহায্য করবে কি না, তাও জানি না। এই ঈদে আর কিছু মনে হয় করতে পারব না।
রোববার সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে অনিশ্চয়তা আর হাহাকারের শব্দ ছাড়া কিছুই মেলেনি। আগুন লাগার পরদিন সকাল থেকে নিউ সুপার মার্কেটের দোকান থেকে পোড়া মালপত্র সরাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।