
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিরাপদ ও লাভজনক বলে মনে করেন মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নেতারা। যেজন্য বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তাদের পরবর্তী বিনিয়োগ, ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশেকে নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনের ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৩’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানানো হয়।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সম্মেলনের আয়োজন করে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। সংগঠনের প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে দেশে প্রথম এই আয়োজন।
বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানাচ্ছে। আমাদের দেশ দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্যের প্রবেশ পথ। সবাইকে আমাদের এই উন্নয়নযাত্রায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। যাতে পরস্পর লাভবান হতে পারি। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি দেশের বর্তমান বাণিজ্য পরিস্থিতি ও অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, আপনাদের বিনিয়োগের লক্ষ্যবস্তু যেন বাংলাদেশ হয়। কারণ আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি—নিরাপদ বিনিয়োগের।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বিশ্ব যখন করোনা ও যুদ্ধের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী দক্ষতার সঙ্গে অর্থনীতিকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন অবদান তুলে ধরে বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও নিরাপদ বিনিয়োগের বিষয়ে কথা বলেন।
ডব্লিউটিও উপমহাপরিচালক জিয়াংচেন জ্যাং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ও অগ্রগতির বিষয়ে প্রশংসা করেছেন।
সৌদি আরবের বাণিজ্যমন্ত্রী ড. মাজেদ বিন আবদুল্লাহ আল কাসাবি বলেন, বাংলাদেশের অনেক সফল ও উন্নয়নের ইতিহাস রয়েছে। এ সময় তিনি তথ্য চিত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের বাণিজ্য সম্পর্ক তুলে ধরেন এবং তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বর্ণনা করেন।
ভুটানের বাণিজ্য ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী কর্মা দর্জি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের পথচলা দীর্ঘদিনের। দেশটি দক্ষ নেতৃত্বের ফলে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আঞ্চলিক বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিণত হয়েছে।
স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআইর সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, এই সামিট আয়োজনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ। এই আয়োজন সারা বিশ্বের ব্যবসায়ী নেতা এবং বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং নতুন ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠনের প্রতিনিধি, বাণিজ্য প্রতিনিধি ও দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা ছিলেন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াবে সৌদি, চীন ও ভুটান : বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আগ্রহের কথা জানিয়েছে এশিয়ার দেশে চীন, ভুটান ও সৌদি আরব। গতকাল শনিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে তিন দিনের ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের’ উদ্বোধন অনুষ্ঠান আসা এসব দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
তিনি বলেন, সৌদি আরব, চীন ও ভুটান বাংলাদেশের বন্ধুরাষ্ট্র। চীন বাংলাদেশের বড় ব্যবসায়িক ও অর্থনৈতিক অংশীদার, বাংলাদেশে চীনের অনেক বিনিয়োগ রয়েছে। চীনের বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জ্বালানি খাতে সৌদি আরব বড় ধরনের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ভুটান বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী।