
রাজধানীর মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনায় পল্লবী থানায় একটি জিডি হয়েছে, মামলারও প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি গতকাল সোমবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে একটি অভিযোগ দিয়েছেন নবজাতকের বাবা মো. মিজানুর রহমান। হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নাহিদা ইয়াসমিনের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ স্বজনের।
মারা যাওয়া নবজাতকের মা তৌহিদা খানম কালবেলাকে বলেন, তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকেই নাহিদা ইয়াসমিনের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। ওই চিকিৎসক ২৩ ফেব্রুয়ারি বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্তান জন্মদানের জন্য অস্ত্রোপচার হবে। ওই দিন ভর্তির পর ডাক্তারকে বলা হয়, তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তখন সংশ্লিষ্ট ডাক্তার আশ্বাস দেন, অবশ্যই শিশু চিকিৎসক উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু অস্ত্রোপচার ও পরবর্তী কয়েক ঘণ্টা হাসপাতালে কোনো শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিলেন না।
বাবা মিজানুর রহমান বলেন, জন্মের কিছুক্ষণ পর ছেলেকে আমার কাছে দিয়ে বলা হয়, সে সুস্থ আছে। কোলে নিয়ে দেখতে পাই, সে গোঙাচ্ছে। বাঁ চোখ ও আশপাশে কালো দাগ, বেশ খানিকটা ফোলাও। দায়িত্বরত নার্সদের বিষয়টি জানানোর পর তারা বলে, বাচ্চার বাঁ পাশে জট। বাচ্চার ক্ষুধা লেগেছে মায়ের কাছে নিয়ে যান। এর পর মায়ের কাছে নেওয়া হলে সে দুধ পান করতে পারছিল না। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তখন শিশু বিশেষজ্ঞের খোঁজ করা হলে হাসপাতাল থেকে বলা হয়, জুমার নামাজের পরে আসবেন। কিন্তু ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা যাওয়ার পরও ডাক্তার না আসায় আবার জিজ্ঞেস করলে বলা হয়, সন্ধ্যার পর। চিকিৎসাসেবা না পেয়ে বাচ্চাটিকে অন্য হাসপাতালে নিতে উদ্যোগ নেওয়া হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বাধায় নেওয়া হয়নি। এরপর রাতে একজন শিশু ডাক্তার এসে বলেন, ডেল্টা হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে নিয়ে গেলে প্রথমে এনআইসিউতে এবং পরে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সারাদিন এভাবে চলার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি জানানো হয়, নবজাতকটি মারা গেছে।
তিনি জানান, এর প্রতিবাদ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো সুরাহা করেনি। পরে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেন। এর পর হাসপাতাল থেকে অজ্ঞাতপরিচয় একজন ফোন দিয়ে বিষয়টি দফারফার প্রস্তাব দেন। হুমকিও দিয়ে বলা হয়, বাড়াবাড়ি করে লাভ নেই।
অভিযোগের বিষয়ে নাহিদা ইয়াসমিনকে ফোন করা হলে কালবেলাকে বলেন, সামনাসামনি কথা বললে ভালো হবে। হাসপাতাল সুপার এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।
পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, ওই ঘটনায় জিডি হয়েছে। এর আলোকে তদন্ত চলছে।