
দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ থাইরয়েড বা গ্রন্থির সমস্যায় ভুগছে। তবে এ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসায় সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে রয়েছেন মাত্র ৩০০ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তাই জেনারেল প্র্যাকটিশ নার্সদের থাইরয়েড রোগ সম্পর্কে জানাতে হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ কথা বলেন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটির আয়োজন করে বাংলাদেশ থাইরয়েড সোসাইটি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের উপাচার্য ও বাংলাদেশ থাইরয়েড সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলম বলেন, যখন কেউ থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয়, তখন তার উচিত পরিবারের সদস্যকে থাইরয়েড রোগ সম্পর্কে সচেতন করা। কারণ পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের থাইরয়েড রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ সচেতনতাই প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে এবং রোগের জটিলতা থেকে রক্ষা করবে।
থাইরয়েড সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ফাওজিয়া মোসলেম বলেন, থাইরয়েডের সমস্যা যদি সঠিক সময়ে নির্ণয় ও এর চিকিৎসা না করা হয় তাহলে হার্ট অ্যাটাকসহ অন্যান্য জটিলতার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি বন্ধ্যত্ব, গর্ভাবস্থার ক্ষতি এবং অন্যান্য গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত সমস্যার কারণ হতে পারে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেসের নিউক্লিয়ার মেডিসিন ও থাইরয়েড বিশেষজ্ঞ এবং বিভাগীয় প্রধান এ কে এম ফজলুল
বারী বলেন, অর্ধেকেরও বেশি থাইরয়েড রোগী জানেন না, তার থাইরয়েডের সমস্যা রয়েছে। এর কারণ সচেতনতার অভাব এবং কখনো কখনো এ সম্পর্কে চিকিৎসকদেরও জ্ঞানের অভাব।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, থাইরয়েড হরমোন শরীরকে শক্তি ব্যবহার করতে, উষ্ণ থাকতে এবং মস্তিষ্ক, পিচ, পেশি ও অন্যান্য অঙ্গকে কাজ করতে সাহায্য করে। এটি মাতৃগর্ভে মস্তিষ্ক এবং শারীরিক গঠন ও বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শরীরকে সর্বোচ্চ কার্যক্ষম করার কাজেও থাইরয়েড গ্রন্থি মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এটি শরীরকে কার্যক্ষম রাখার জন্য সঠিক পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ করে। থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনের জন্য আয়োডিনের প্রয়োজন। তাই শরীরে আয়োডিনের ঘাটতির সঙ্গে থাইরয়েডের সম্পর্ক রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেসের পরিচালক ডা. সাদিয়া সুলতানা প্রমুখ।