
কারাগারে অবৈধ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিরোধে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সীমিত করতে জ্যামার বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাঁচটি কারাগারে জ্যামার বসানো হবে। এগুলো হলো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২, কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার ও নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার। এর ফলে কারা অভ্যন্তরে অবৈধ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এস এম আনিসুল হক।
কালবেলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, কারা আধুনিকায়ন প্রজেক্টের অধীনে কারাগারের অভ্যন্তরে অবৈধ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারা প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশাসন ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কারা অভ্যন্তরে ভিআইপি বন্দিদের অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে কর্তৃপক্ষ সদা তৎপর।
কারাগারে বন্দিদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে গৃহীত নানা উদ্যোগ তুলে ধরে এ এস এম আনিসুল হক বলেন, বন্দিরা যাতে সুচিকিৎসা পায় সেজন্য চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে। সুষম খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ২৮টি কারাগারে প্রতিদিন ডিজিটাল মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। কারা মহাপরিদর্শক আরও জানান, কারাগার থেকে বন্দি প্রেরণে বন্দি নিরাপত্তা ও সংবেদনশীল বন্দিদের ব্যাপারে কারা কর্তৃপক্ষ ভার্চুয়াল কোর্টে বিচারের জন্য কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জ দুটিতেই ভার্চুয়াল কোর্টের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেন, বন্দিদের সংশোধন, সমাজে পুনর্বাসন কার্যক্রমে কারাগার হচ্ছে সংশোধনাগার। সেই লক্ষ্য পূরণে কারা কর্তৃপক্ষ অসহায় বন্দিদের আইনি সহায়তা দেওয়া ছাড়াও মানবিক আচরণ করা হয়।
কারা মহাপরিদর্শক জানান, দেশে ৬৮টি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার, ৫৫টি জেলা কারাগার। হাজতি ও কয়েদি হিসেবে কারাগারে বন্দিরা আসে। তাদের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত তিনবার
খাবার দেওয়া হয়। বিনোদনের জন্য প্রতিটি জেলখানায় খেলাধুলার ব্যবস্থা ও বন্দি ব্যারাকে টেলিভিশন দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি জেলখানায় প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।
কারাগারের মান সম্পর্কে আনিসুল হক বলেন, প্রতিবেশী অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশের কারাগারের মান এগিয়ে রয়েছে। তবে কারা সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া—যার মাধ্যমে আধুনিক কারাগারে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা চলমান।