ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে পাচারের দায়ে ফেসবুকের স্বত্বাধিকারী মেটাকে ১৩০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ হাজার ৯১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা) জরিমানা করেছে আয়ারল্যান্ডের ডেটা প্রটেকশন কমিশন (ডিপিসি)। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও নিউইয়র্ক টাইমসের।
গতকাল সোমবার ইইউর তথ্য-উপাত্ত সুরক্ষা সম্পর্কিত প্রচলিত আইন জেনারেল ডেটা প্রটেকশন রেগুলেশনের (জিডিপিআর) আওতায় এ জরিমানার কথা জানায় ডেটা প্রটেকশন বোর্ড। পাশাপাশি ফেসবুকের ইউরোপীয় সেবাগ্রহীতাদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করতে পাঁচ মাসের নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়। আইনে আছে, ইউরোপের বাইরে তথ্য স্থানান্তরের আগে অবশ্যই ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে মেটা যে প্রক্রিয়ায় তথ্য স্থানান্তরিত করেছে, তাতে আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে। তথ্য পাচারের অভিযোগে এ পর্যন্ত ইউরোপীয় ডেটা প্রটেকশন বোর্ড যত জরিমানা জারি করেছে, আর্থিক অঙ্কের হিসাবে সেসবের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ।
এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ডেটা প্রটেকশন বোর্ডের চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া জেলিনেক বলেন, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। ফলে ধারাবাহিক ও পদ্ধতিগতভাবে বিপুলসংখ্যক ব্যক্তিগত তথ্য পাচার হয়েছে। কারও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। এ ধরনের অপরাধ করলে অবশ্যই কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে। মেটার এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কর্মকাণ্ডের জন্য জরিমানার মাধ্যমে আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে সতর্ক বার্তা দিতে চাই।
এদিকে, মেটা এ সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয় বর্ণনা করে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে বলে জানিয়েছে। যে সমস্যাটি নিয়ে ইইউ এ জরিমানা জারি করেছে, তা মেটার পরিকল্পনা বা গাফিলতির জন্য নয়, বরং এটি একটি আইনবিষয়ক জটিলতা।
মেটার সদর দপ্তরের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান নির্বাহী নিক ক্লেগ ও মেটার প্রধান লিগ্যাল অফিসার জেনিফার নিউস্টেড এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি হওয়ায় মেটা সে দেশের আইন-কানুন অনুযায়ী কোম্পানি পরিচালনা করে। ব্যক্তিগত ডেটা ও গোপনীয়তা রক্ষা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইন ইউরোপের আইন থেকে ভিন্ন। এ সমস্যা সমাধানে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকরা বৈঠক শুরু করেছিলেন। তারা সমাধানে পৌঁছানোর পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছিলেন; কিন্তু তার আগেই এ জরিমানা জারি করা হলো।
