গণশৌচাগারে ঠাঁই হওয়া বৃদ্ধকে বাড়ি ফেরাল পুলিশ

গণশৌচাগারে ঠাঁই হওয়া বৃদ্ধকে বাড়ি ফেরাল পুলিশ
ছবি : কালবেলা

নিজের ভিটেমাটি-জমিজমা সবকিছু লিখে দিয়েছেন সন্তানদের নামে। সেটাই কাল হয়েছে ৭০ বছরের লিয়াকত আলীর জন্য। সম্পত্তি লিখে দেওয়ার পর থেকে লিয়াকত থাকতেন জরাজীর্ণ ভাড়া বাসায়। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে সেখান থেকে নিয়ে যেতে বলেন বাড়িওয়ালা। এতেই চটে যান সন্তানরা। ক্ষুব্ধ হয়ে বৃদ্ধ বাবাকে রেখে আসেন গণশৌচাগারে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।

গত শুক্রবার বিকেলে লিয়াকত আলীর দেখা মেলে নগরীর তালাইমারীর একটি গণশৌচাগারে। পরে খবর পেয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন ঘটনাস্থলে যান। সেখানে সন্তানদের ডেকে বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ তার বড় ছেলের বাড়িতে রয়েছেন।

লিয়াকতের ভাড়া বাসার মালিক কমলা বেগম বলেন, হঠাৎ দেখি ওই ব্যক্তি অসুস্থ। এজন্য নিজে উদ্যোগী হয়ে ছেলেদের ডেকে তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করি। কথামতো তারা নিয়েও যায়। পরে দেখি ছেলেরা তাকে একটি গণশৌচাগারে রেখে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, এক সময় লিয়াকত আলীর জমি ও বাড়ি ছিল। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে মিঠু মুদিখানার ব্যবসা করে। মেজো ছেলে সুমন ও ছোট ছেলে লিমন দুজনই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার মিস্ত্রি। সবকিছু সন্তানদের লিখে দিয়েছেন। ছেলেরা সচ্ছল হলেও এখন কিছুই নেই তার।

নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তরিকুল আলম পল্টু বলেন, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন লিয়াকত আলী। তাকে নিয়েই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। বার্ধক্যজনিত কারণে লিয়াকত কাজ করতে পারেন না। দ্বিতীয় স্ত্রী মানুষের বাড়িতে গিয়ে কাজ করে যে টাকা উপার্জন করেন, তা দিয়েই দুজনের সংসার চলে।

ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ছেলেদের ডাকি। এ সময় তার বড় ছেলের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়। রাতে আমি নিজে ছেলের বাড়িতে গিয়ে রেখে আসি। শনিবার সকালেও খোঁজখবর নিয়েছি। ওই বৃদ্ধ এখন ভালো আছেন।

ওসি আরও বলেন, ছেলেদের পারিবারিক অবস্থা বেশ ভালো। তারা অনায়াশেই বৃদ্ধ বাবার ভরণ-পোষণ ও লালন-পালন করতে পারবে। এগুলো আসলে মানসিকতার ব্যাপার। আমি সার্বক্ষণিক ওই বৃদ্ধের খোঁজখবর রাখছি। তাকে মাঝেমধ্যে দেখেও আসব।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com