
গত ১৬ মার্চ ‘রাবিতে সংঘর্ষে ভিসি ও ছাত্র উপদেষ্টা দায়ী’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে এই প্রতিবাদলিপি পাঠান।
সংবাদটি ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও উপাচার্যের সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে সংবাদ নামের এই গল্প তৈরি করা হয়েছে।’
প্রকৃত ঘটনা এমন নয় উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘শনিবার সন্ধ্যায় উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ামে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনাটি জানতে পারেন। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ঘটনাস্থলে প্রশাসনের প্রতিনিধিদের পাঠান। এরপর অল্পক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হন উপাচার্য। ঘটনার শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকেন উপাচার্য। ছাত্র উপদেষ্টার বিষয়ে যে অভিযোগ সংবাদে প্রকাশিত হয়েছে সেটিও সত্য নয়। উপাচার্যের নির্দেশে রাত ১০টার পর থেকেই ছাত্র উপদেষ্টা আহত শিক্ষার্থীদের পাশে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন।’
এতে আরও বলা হয়, ‘ছাত্রলীগ সভাপতিকে ঘটনা সামাল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা সেদিন ঘটেনি। তিনি কী নির্দেশ দিলেন, কীভাবে নির্দেশ দিলেন–এ তথ্য সংবাদে উপস্থাপন করা হয়নি। বরং সংবাদটিতে সংঘর্ষের জন্য মনগড়াভাবে উপাচার্যকে সরাসরি দায়ী করা হয়েছে। এ ব্যাপারটি একটি স্বার্থান্বেষী মহলের হীনউদ্দেশ্য পূরণের অপচেষ্টার অংশ বলে আমরা মনে করি।’
প্রতিবেদকদ্বয়ের বক্তব্য : সংবাদটি যথেষ্ট তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতেই প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে বিশ্ববিদ্যালয় ‘প্রশাসন ও উপাচার্যের সুনাম নষ্ট হোক’–এমন কোনো উদ্দেশ্য প্রতিবেদকদ্বয়ের ছিল না। এমনকি এটি ‘কোনো স্বার্থান্বেষী মহলের হীনউদ্দেশ্য চরিতার্থের অপচেষ্টার অংশও’ ছিল না। গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় সংঘর্ষের প্রাক্কালে উপাচার্য নিজে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতিকে ঘটনাস্থলে যেতে বলেন বলে প্রতিবেদকের কাছে তথ্য রয়েছে। তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ধাওয়া করে স্থানীয়রা। এ সময় তারা মোটরসাইকেল রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে ছাত্রলীগের ৬-৭টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিলে উত্তেজিত হয় ছাত্রলীগ। এর পরই শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ।
এর আগে রাবির ছাত্র উপদেষ্টা ঘটনাস্থলে যেতে দেরি করায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমাদ ছাত্র উপদেষ্টার ওপর ক্ষেপে যান। দেরিতে ঘটনাস্থলে আসা এবং কেন ফোন রিসিভ করেননি তার কারণ ছাত্র উপদেষ্টার কাছে তিনি জানতে চান। এতে ছাত্র উপদেষ্টাকেও উত্তেজিত হতে দেখেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে ছাত্র উপদেষ্টার উপস্থিতিতেই উভয়পক্ষের মধ্যে পুনরায় সংঘর্ষ বাধে।
এরপর ওই দিন (১১ মার্চ) রাতে উপাচার্য মোবাইল ফোনে এক ব্যক্তিকে বলেন ‘আমার ছাত্রদের আমি নিয়ে এসেছি। এখন যারা আছে তারা আমার ছাত্র নয়, এরা শিবির।’ এর পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রাবার বুলেট ও শটগানের গুলিতে ছাত্রলীগ, সাধারণ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১৫-২০ জন আহত হয়।