সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় বোরো ধানের মাঠে বিভিন্ন ধরনের পোকা শনাক্তকরণে স্থাপন করা হচ্ছে আলোর ফাঁদ। এতে ফসলের ক্ষতি কমিয়ে আনাসহ মিলবে ভালো ফলন। স্থানীয় কৃষি বিভাগ চলতি মৌসুমে বিভিন্ন মাঠে ৪৩০টি আলোর ফাঁদ স্থাপন করেছে।
জেলার শস্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত উল্লাপাড়া উপজেলায় প্রতিবছর বোরো মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের পোকার উপদ্রব দেখা দেয়। কৃষকদের এই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষায় চলতি বোরো মৌসুমে স্থানীয় কৃষি বিভাগ আগেভাগেই কার্যকর উদ্যোগ নেয়। এসব পোকার মধ্যে উপকারী এবং ক্ষতিকারক উভয় থাকে। কৃষকরা না বুঝে এ পোকা দমনে জমিতে নিজেদের ইচ্ছামতো কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করেন। এতে ধানের ব্যাপক ক্ষতিসহ উপকারী পোকা মারা যায়। পরিবেশ বিপর্যয়সহ কীটনাশকের পেছনে কৃষককে মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করতে হয়। দেখা দেয় ফলন বিপর্যয়। এতে ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষকরা।
উপজেলায় এরই মধ্যে ৫০টি অধিক আলোর ফাঁদ স্থাপন করা হয়েছে। চলছে বাকিগুলো স্থাপনের কাজ। কৃষি কর্মকর্তাসহ উপসহকারী মাঠ কর্মীরা রাতের বেলা নিজেরাই বোরোর মাঠে নেমে এ ফাঁদ স্থাপন করছেন। কৃষিজমির ২০০ মিটার দূরে ধানগাছের দুই-তিন ফিট উঁচুতে আলোর ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে লাইট, ব্যাটারি দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের ফাঁদের নিচে বালতি, গামলা স্থাপন করা হয়। এর ভেতর সাবান পানির মিশ্রণ রাখা হয়। রাতে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট এ আলোর ফাঁদ জ্বালানো হয়। এতে আকৃষ্ট হয়ে মাঠের পোকামাকড় উড়ে এসে সেই ফাঁদে পড়ে মারা যাবে। কৃষি কর্মকর্তারা সপ্তাহে একদিন করে বিভিন্ন এলাকার মাঠে গিয়ে সেই ফাঁদে পড়া পোকামাকড় পরীক্ষা করে কৃষকের জমিতে প্রয়োজনীয় কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগের কথা জানাচ্ছেন। সেই অনুযায়ী কৃষকরা তা জমিতে প্রয়োগ করবেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি জানান, আমরা ইরি-বোরো মৌসুমের শুরুতেই উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আলোর ফাঁদ স্থাপন করা শুরু করেছি। বোরো মৌসুমে নিজেদের অর্থায়নে উপজেলায় ৪৩০টি আলোর ফাঁদ স্থাপন করছি। এ পদ্ধতির কারণে অন্য জমির ফসলও ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যাবে। পোকা দমনে এমন পদ্ধতি পেয়ে কৃষকরাও দারুণ খুশি।