শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
সুশোভন অর্ক
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

‘দারোয়ানের পায়ে ধরেছি এর পরও গেট খোলেনি’

‘দারোয়ানের পায়ে ধরেছি এর পরও গেট খোলেনি’

বঙ্গবাজারের অ্যানেক্সকো ভবনের সামনে চিৎকার করে কাঁদছিলেন ব্যবসায়ী মিরাজ পাটোয়ারী। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনে দেখেছেন সবকিছু পুড়ে যেতে। সব হারিয়ে আজ তিনি নিঃস্ব। আগুন লাগার সময় তিনি বঙ্গবাজারেই উপস্থিত ছিলেন। শুরুতে যখন আগুন কম ছিল, তখন চেয়েছিলেন তার মালপত্র বের করে আনতে। চিৎকার করে বলছিলেন, ‘আমি যখন আসি তখন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কেউ ছিল না। মার্কেটের দারোয়ানের পায়ে ধরছি আমি। বলছি গেটটা খুলে দেন, মালামাল সরাই। দারোয়ান আমায় লাত্থি মারছে। বলে গেট খোলা যাবে না। এখন আমার সব শেষ।’

মিরাজ পাটোয়ারী জানান, আগুন লাগার ঘটনা তিনিই প্রথম দেখতে পান। এই ব্যবসায়ীর দাবি, ফায়ার সার্ভিস প্রথমদিকে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। ঠিকঠাক গুরুত্ব দিলে ক্ষয়ক্ষতি এত বেশি হতো না।

তিনি অভিযোগ করেন, তিনি ঘটনাস্থলে আসার ১০ মিনিট পরে ফায়ার সার্ভিস আসে। প্রথমে আগুন কম ছিল; কিন্তু তারা এসে কিছুই করতে পারেননি। আগুন বাড়তেই থাকে। এত কাছে ফায়ার সার্ভিসের অফিস, এর পরও তারা এই আগুনের ভয়াবহতা কমাতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘আমি যখন দারোয়ানকে অনুরোধ করি তখন সে বলে, মার্কেটের প্রশাসন না করেছে গেট খোলার জন্য। তারা আমাদের কোনো সাহায্য করে নাই। আমরা কিছু বের করতে পারি নাই। আমি আগুন দেখেই দৌড়ে ছুটে আসি; কিন্তু কিছুই করতে পারি নাই। আমার ১১টা দোকান পুড়ে গেছে। আমি একটা দোকানের জিনিসও বের করতে পারি নাই। আমি চোখের সামনে এমন আগুন দেখে অজ্ঞান হয়ে যাই। কে আমায় বাসায় তুলে নিয়ে গেছে আমি জানি না। আমার দোকান সব ভেঙে গেছে। মালামাল কই আছে আমি কিছুই জানি না।’

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বঙ্গবাজার পুড়ে ছাই হওয়ার পেছনে কোনো মহলের ইন্ধন আছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও শুরু থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করেননি। এ অভিযোগ তুলে ব্যবসায়ীরা উত্তেজিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরে ইট, লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি।

বঙ্গবাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম অভিযোগ করেন, ভোরবেলা যখন জানা গেছে যে বঙ্গবাজারে আগুন লেগেছে, তখন ফায়ার সার্ভিস কোনো পাত্তাই দেয়নি ব্যাপারটিকে। শুরুতে তৎপর হলে এই আগুন এত বড় আকার ধারণ করত না। বঙ্গবাজারের পাশেই হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের দপ্তর। এখানের আগুন কীভাবে এত ভয়াবহ হয়, সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন। তিনি বলেন, আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের নিয়ে গভীর চক্রান্ত হয়েছে। আমরা আজ পথে বসে গেলাম। ঈদ উপলক্ষে দুই দোকানে এক কোটি টাকার মালামাল ছিল। সব শেষ হয়ে গেছে।

দোকান মালিক সমিতির দাবি, বঙ্গবাজারের আগুনের ঘটনায় কমপক্ষে ৫ হাজার দোকান পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। তবে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তদন্তের পরই আগুন লাগার কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানা যাবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিলেটে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২

ব্যারিস্টার খোকনের দলীয় পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি 

বাড়ি ফেরা হলো না বাবা-ছেলের

বাংলাদেশের দাবদাহ নিয়ে যা বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম

অনুষ্ঠিত হলো বিইউএইচএস -এর প্রথম সমাবর্তন

ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে : ম্যাখোঁ

ছেলেদের দোষে ডুবছেন মাহাথির মোহাম্মদ

হিজাব আইন না মানায় ইরানে ব্যাপক ধরপাকড়

তীব্র তাপপ্রবাহে বৃষ্টি চেয়ে হাজারো মুসল্লির কান্না

মানব পাচারের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

১০

ঝিনাইদহে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

১১

কারিগরির ফাঁকা সনদ মিলল তোষকের নিচে, গ্রেপ্তার কম্পিউটার অপারেটর

১২

ঝিনাইদহে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

১৩

ভোট দিলে যে শহরে মিলবে ফ্রি বিয়ার, ট্যাক্সিসহ নানা সুবিধা

১৪

কুমিল্লায় পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মৃত্যু

১৫

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফখরুলের সাক্ষাৎ

১৬

চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ

১৭

সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরলেন শিক্ষামন্ত্রী 

১৮

৭৩ বছরে ছাত্র ইউনিয়ন  

১৯

কৃষক খুনের ঘটনায় থামছে না ভাঙচুর ও লুটপাট

২০
*/ ?>
X