রাবি ছাত্রলীগের নির্যাতনে শিক্ষার্থীর হাতে ফ্র্যাকচার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় মারধরের শিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী সাফায়েত হোসেনের ডান হাতে ফ্র্যাকচার হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে বলা হয়েছে তাকে। এদিকে এ ঘটনায় মানসিক অস্বস্তি ও হলে অনিরাপদ বোধ করছেন তিনি। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর এসব কথা জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

এ ঘটনায় শেরেবাংলা হলের আবাসিক শিক্ষক শাহ মো. শাহান শাহরিয়ারকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, গত শুক্রবার দুপুরে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচিতে যাওয়ার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই হলের রুমে রুমে শিক্ষার্থীদের ডাকতে যান। আল-আমিন নামের একজন সাফায়েতকে ডাকতে গেলে তিনি কর্মসূচিতে যেতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে নাজমুলসহ চার-পাঁচজন তেড়ে এলে নিজেকে রক্ষায় তিনি বঁটি উঁচিয়ে ধরেন। এ সময় আশপাশে থাকা শিক্ষার্থীরা তাদের থামিয়ে দেন। পরে কর্মসূচি শেষে ছাত্রলীগের চার-পাঁচজন এসে সাফায়েতকে মারধর করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

জানা যায়, গতকাল শনিবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে এক্স-রে করার পর হাতে ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। এ জন্য হাতে ব্যান্ড পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহ তাকে বিশ্রামে থাকার জন্য চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন।

সাফায়েত হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শেরেবাংলা হলের ২২১ নম্বর কক্ষে থাকেন। মতিহার হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ছাত্রলীগ কর্মী আল আমিন ও তাদের অনুসারীরা তাকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। আল আমিন ও নাজমুল হাসান দুজনই ওই হলে থাকেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদের অনুসারী।

নিজের অনিরাপত্তার কথা বলে সাফায়েত বলেন, ‘মারধরের পর থেকে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছি। ঠোঁটে বেশি লেগেছিল কিন্তু ওষুধ খেয়ে অনেকটা ভালো লাগছে। তবে হাতের ফ্র্যাকচারের বিষয়ে ভয় লাগছে। কবে এটি ঠিক হয়, জানি না। এ অবস্থায় একাডেমিক কাজ ও পড়াশোনা কঠিন হবে।’

সাফায়েতের বন্ধু সমাজকর্ম বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী সবুজ আহমেদ বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে সবসময় সাফায়েতের পাশে আছি। এ রকম অতর্কিত হামলায় সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমরা চাই এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হোক।’

শেরেবাংলা হলের প্রাধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ভুক্তভোগী ছাত্রের খোঁজখবর ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এ ছাড়া এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com