কক্সবাজারের রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ৪৫ শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা গতকাল শুক্রবার দুপুরে রামু চৌমুহনী স্টেশনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। তারা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারীর শাস্তির দাবি জানান। এতে ওই সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোসাইন সন্ধ্যায় ইউএনওসহ বৈঠক করে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভরতরা সরে যান।
পরে সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফাহমিদা মুস্তাফা। রাত ৯টায় বৈঠক থেকে তিনি জানান, শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি সুষ্ঠু সমাধান হবে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে ফরম পূরণে ব্যাপক অনিয়ম, রেজিস্ট্রেশন ভুলের কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। করোনাকালে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অষ্টম শ্রেণিতে তাদের রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি। স্কুল খোলার পর প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারী রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার আশ্বাসে তাদের কাছ থেকে খরচ বাবদ টাকাও নেন। ওই সময় বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তারা নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। পরে তারা নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য অনুরোধ জানালে প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারী তাদের অষ্টম ও নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন একসঙ্গে করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ আশ্বাসে লেখাপড়া করে তারা দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়।
জানা গেছে, আগামী রোববার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্র দিতে পারেনি। এবার এসএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলে তাদের আবারও অষ্টম শ্রেণি থেকে পড়ালেখা শুরু করতে হবে। এ ঘটনায় তারা গত ২৫ এপ্রিল কক্সবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
পরীক্ষার্থী রয়েছ উদ্দিন জানান, তিনি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন কার্ডে তার বিভাগ উল্লেখ করা হয়েছে বাণিজ্য। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে বারবার তাগদা দেওয়া সত্ত্বেও তা সংশোধন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর আহমদ বলেন, সব শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ করে পাস করার উপযোগী শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনিয়ম ও ভুলের জন্য তিনি বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মফিজুল আলম ও অফিস সহকারী অনু বড়ুয়ার গাফিলতি ছিল বলে জানান।