আর্থিক সহযোগিতা চান তারাও

ক্রীড়া প্রতিবেদক
আর্থিক সহযোগিতা চান তারাও

একপায়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাউন্ডারি ঠেকিয়ে দিচ্ছেন কেউ; কেউবা এক হাতেই লুপে নিচ্ছেন স্লিপের ক্যাচ। কারোর হাতে সমস্যা তো কারোর পায়ে, তবুও দমে যাওয়ার পাত্র নন কেউই। মাথায় হেলমেট, পায়ে প্যাড লাগিয়ে ক্রিকেট খেলছেন তারা। হোম অব ক্রিকেট খ্যাত মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দেখা মিলল সে দৃশ্যটা। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়েও যে এতদূর আসা যায়, তারই বাস্তব উদাহরণ মাহফুজুর রহমান, দ্রুপম পত্র নবিশ তীর্থরা।

ক্রিকেটের হাতেখড়ি জানা সবার স্বপ্ন থাকে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে জীবনে একবার হলেও খেলা। বিসিবির আয়োজিত ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্টের মাধ্যমে সে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে মাহফুজ, সাজ্জাদ, তীর্থদের। প্রথমবার হওয়া টুর্নামেন্টের ফাইনাল হয়েছে মিরপুরে। আইসিসির টেস্ট ভেন্যুতে খেলা ও ড্রেসিংরুম শেয়ার করার অভিজ্ঞতা কালবেলাকে শুনিয়েছেন অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন দল বিসিএপিসির বোলার সাজ্জাদ হোসেন, ‘এখানে খেলতে পেরেছি ভালো লেগেছে। খুব ভালো লাগতেছে (ড্রেসিংরুম শেয়ার) যে, আমরাও জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মতো ওখানে বসতে পেরেছি।’ ১৭ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে থাকা তীর্থর মতে, এ ধরনের টুর্নামেন্টের গভীরতা অনেক। তার ভাষ্যমতে, ‘আমাদের মতো এমন অনেক ক্রিকেটারই আছে, যারা ভালো খেলে কিন্তু সুযোগের অভাবে খেলতে পারছে না। এরকম টুর্নামেন্ট যদি নিয়মিত হয়, তাহলে অনেক ভালো ক্রিকেটার বের হবে।’

ছোটবেলায় আগুনে পুড়েছে হাতের একপাশ। একটি আঙুল ঠিকঠাক কাজ করে না। তুবও টুর্নামেন্টজুড়ে ব্যাটে বলে দুর্দান্ত ছিলেন বিসিএপিসির অলরাউন্ডার মাহফুজুর রহমান। ১৪০ রানের সঙ্গে নেন ১০ উইকেটও। নিজের সাফল্যের পেছনে পরিবার ও কোচদের সহযোগিতা ছিল জানিয়ে এ অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘একটা খেলোয়াড় সব সময় স্বপ্ন দেখে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে। আমাদের সুন্দর একটা টুর্নামেন্ট হয়েছে, বিসিবিকে ধন্যবাদ এখানে খেলার সুযোগ করায়। ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জ থাকার পরও যে এভাবে খেলা যায়, এটা অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে। সবচেয়ে ভালো লাগল ম্যাচসেরা ও টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ায়। কোচ, পরিবার, স্যাররা সবাই সহযোগিতা করেছেন বলে এ পর্যন্ত এসেছি।’

দল হিসেবে দুর্দান্ত খেলার রহস্যটা জানিয়েছেন বিসিএপিসির ব্যাটার জাবেদ ভূঁইয়া, ‘দল হিসেবে আমাদেরটা অনেক ভালো ছিল। আমরা ইংল্যান্ড, আমিরাতে সফর করেছি (এ দলটি)। আমরা কক্সবাজারে হওয়া চার জাতির টুর্নামেন্টেও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় চ্যাম্পিয়ন হই। এখানেও আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমাদের দলের প্রতি অনেক আস্থা ছিল, আত্মবিশ্বাসী ছিলাম সবাই যে আমরাই শিরোপা জিতব।’ তবে সুযোগ-সুবিধা পেলে সামনে আরও ভালো করার সুযোগ দেখছেন তিনি, ‘সবাই যদি খেলার মধ্যে থাকত, তাহলে আরও অনেক উন্নতি করবে। ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, ভারতের দলগুলো অনেক ভালো। কারণ, ওরা বোর্ডের আয়ত্তে থেকে ১২ মাসই সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, আমাদেরও সেরকম হবে আশা করি।’

পরিবারের সহযোগিতা না পেলে এতদূর আসতে পারতেন না মাহফুজ, সাজ্জাদ, তীর্থরা। কেননা ক্রিকেট বেশ ব্যয়বহুল খেলা। ব্যাট, প্যাড, জুতা সবমিলিয়ে বেশ ব্যয় করতে হয় ক্রিকেটারদের। সে কারণেই বিসিবির কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা চান ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেটাররা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com