চট্টগ্রামে দর্শকদের ক্ষোভের শেষ নেই

ওয়ানডেতে চট্টগ্রামের গ্যালারি ফাঁকা থাকলেও গতকাল টি-টোয়েন্টিতে ছিল দর্শকপূর্ণ
ওয়ানডেতে চট্টগ্রামের গ্যালারি ফাঁকা থাকলেও গতকাল টি-টোয়েন্টিতে ছিল দর্শকপূর্ণমো. সুমন

তৃতীয় ওয়ানডের আগে মাইকিং করেও দর্শকদের সাড়া মিলছিল না। সবগুলো গ্যালারি মিলিয়ে দর্শক সংখ্যা ছিল হাজার পাঁচেক। অথচ এক সময় চট্টগ্রামে খেলা হলেই গ্যালারিতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ত। সর্বশেষ বিপিএল থেকেই কেন যেন তা আর দেখা মিলছিল না। হঠাৎ দর্শকদের অনীহার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে অনেক কিছু।

ওয়ানডে ম্যাচে ফাঁকা গ্যালারিতে গা হেলিয়ে খেলা দেখতে দেখা গিয়েছিল কয়েকজনকে। টি-টোয়েন্টিতে ঠিকমতো বসারও জায়গা নেই। গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ। প্রথম ম্যাচে না আসার কারণ যেমন জানিয়েছেন, তেমনি ক্ষোভ থাকার পরও সাকিব আল হাসান, লিটন দাসদের খেলার প্রতি ভালোবাসা থেকে মাঠে এসেছেন অনেকে।

সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ইস্টার্ন স্ট্যান্ড ম্যাচ শুরু হতেই পরিপূর্ণ। খেলা দেখছিলেন কলেজপড়ুয়া একদল সমর্থক; সবাই সীতাকুণ্ড উপজেলার বাসিন্দা। ওয়ানডে দেখতে না এলেও টি-টোয়েন্টি দেখতে আসার কারণ হিসেবে জুবাইর হোসেন বলেছেন, ‘প্রথমত ঢাকায় সিরিজ হেরে যাওয়ায় আমাদের তেমন আগ্রহ ছিল না। সিরিজ হারার পর আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচ দেখতে আসার কোনো কারণও নেই।’ জুবাইরের কথার প্রসঙ্গ ধরে সহপাঠী রাহাত বলেন, ‘টিকিট অনলাইনে না দিলে মাঠে এসে খেলা দেখা কঠিন। আমরা এক-দুদিন আগে এতদূর থেকে এসে টিকিট নিই। সব সময় এভাবে দুদিন করে এতদূর থেকে আসাও সম্ভব হয় না। এ জন্য ইচ্ছা থাকলেও আমরা আসি না। টিকিট অনলাইনে হলে তখন এ সমস্যা হবে না।’

কাউন্টার থেকে টিকিট না নিতে পারলে ভোগান্তি পোহাতে হয় জানিয়ে রাহাত বলেছেন, ‘কাউন্টারে বিশাল লাইনের জন্য টিকিট নিয়ে খেলা দেখা অনেক কষ্টের। আবার অনেক কালোবাজারি পাওয়া যায়, যারা ২০০ টাকার টিকিট ৫০০ টাকায় বিক্রি করে। তখন উপায় না পেয়ে আমরা তাদের কাছ থেকেই টিকিট নিই। আমরা কলেজ শিক্ষার্থী, আমাদের জন্য এটা ব্যয়বহুল।’ পাশের সিটে স্ত্রীকে নিয়ে বসে আইসক্রিম খাচ্ছিলেন প্রবাসী মইনুল ইসলাম। দেশে আসার পর স্ত্রীকে নিয়ে বাংলাদেশের খেলা দেখতে এসেছেন। তার ভাবনা আবার ভিন্নরকম, ‘দেখেন পুরো মাঠে ছাউনি খুব একটা নেই। বিকেল ৩টায় অনেক তাপ থাকে। দুপুর হলে তো বসাই যেত না। এগুলোর দিকে আয়োজকদের খেয়াল রাখা উচিত।’

চট্টগ্রামের দর্শকদের এ দাবিগুলো নতুন নয়। গ্যালারির সংস্কার, টিকিট প্রাপ্তি সহজকরণসহ একাধিক সমস্যা নিয়ে বহুবার কথা বলেছেন তারা। যদিও এতদিনে তার কোনো সমাধান হয়নি। এবার তাই বেছে বেছে খেলা দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। তবে আয়ারল্যান্ড সিরিজে টিকিট সমস্যার একটা সমাধান আসতে পারে। সিরিজ শুরুর আগের দিন সাধারণ দর্শকদের কষ্ট তুলে ধরা হলে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেছিলেন, ‘আসলেই মানুষের কষ্ট হয়। এটা কিছু আরাম দিতে পারে অবশ্যই, যদি অনলাইন বা ইউজার ফ্রেন্ডলি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থাকে। চেষ্টা করব আগামী অন্তত আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে যেন তা থাকে।’ বিসিবির প্রধান নির্বাহীর দেওয়া আশ্বাস বাস্তবে দেখা মিললে মাঠে দর্শকসমাগমও বাড়বে, এমন প্রত্যাশা দর্শকদেরও।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com