এবার পেস ব্যাংকে চোখ হাথুরুর

ফাস্ট বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডকে মাঝে রেখে বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকের পাঁচ তারকা। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে
ফাস্ট বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডকে মাঝে রেখে বাংলাদেশের পেস অ্যাটাকের পাঁচ তারকা। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেবিসিবি

বাংলাদেশ জাতীয় দলের ফাস্ট বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডকে মাঝে রেখে মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ ও এবাদত হোসেনদের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল। ছবিটা শেয়ার করে তাসকিন-শরীফুলরা লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ পেস ইউনিট।’ সম্প্রতি অনেকটা স্বপ্নের মতো একটা পেস ইউনিট পেয়েছে বাংলাদেশ। বছর তিনেক আগেও যা ছিল অকল্পনীয়। এমন দুর্দান্ত বোলিং ইউনিট পেয়ে চিন্তাভাবনায়ও পরিবর্তন এনেছেন প্রধান কোচ হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশে ফেরা চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

কোচ হিসেবে স্পিননির্ভরতার তকমা লেগে আছে হাথুরুসিংহের গায়ে। দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশে ফেরার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা মেজাজ হারিয়েছিলেন। সেদিন পেসারদের মিসাইল আর স্পিনারদের গেরিলাযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে হাথুরু বলেছিলেন, ‘যদি মিসাইল না থাকে, তাহলে তুমি কীভাবে লড়াই করবে। আমাদের তো গেরিলা যুদ্ধ করতে হবে।’ তবে ইংল্যান্ড সিরিজ যেতেই তার সে ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। তাসকিন, মুস্তাফিজ, হাসান, এবাদতদের দেখে নতুন করে ভাবতে শিখেছেন এ লঙ্কান কোচ। এবার ফাস্ট বোলিং ব্যাংক তৈরিতেও মনোযোগ তার। ২০১৪-১৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকাকালে স্পিন রাজত্ব দেখিয়েছিলেন হাথুরু। দেশে কিংবা বিদেশে দুজনের বেশি পেসার খেলাতে চাইতেন না তিনি, এমন কথা শোনা যেত খুব। এবার তার সে ভাবনায় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। গতকাল সিলেটে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে হাথুরু বলেছেন, ‘আমি সব সময় স্পিনারদের এগিয়ে রাখি, তারা খুব দক্ষ ও কৌশলী। তবে এই সময়ের মধ্যে আমার ফাস্ট বোলাররা দ্রুত উন্নতি করেছে। আমি এটা দেখে খুশি।’

সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড সিরিজে স্পিনারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জে ফেলেছেন তাসকিন-মুস্তাফিজরা। ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশের পেছনে বড় অবদান রেখেছেন তারা। সিরিজসেরা পাঁচ বোলারের তিনজনই বাংলাদেশি পেসার। পেসারদের এমন উত্থানে খুশি হাথুরুও, ‘আমরাও সেটাই চেষ্টা করছি, ফাস্ট বোলারদের বেশি বেশি ম্যাচ খেলানোর। এতে তারা আত্মবিশ্বাস পাবে এবং আমরাও বুঝতে পারব কীভাবে তারা দায়িত্ব সামলায়।’

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে শেষ ওভার করতে আসা হাসানকে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান ক্রিস ওকস। ডাগ আউটে থাকা কোচ ডোনাল্ডকে বেশ বিচক্ষণ দেখাচ্ছিল তখন। ছুটে এসে মিরাজের মাধ্যমে বার্তা পাঠান তিনি। তবে মাঠে থাকা অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের পরামর্শে পরের চার বলে সফল হন হাসান। সে কথা মনে করিয়ে হাথুরু বলেছেন, ‘আমাদের যদি আরও খেলা থাকত, ও (হাসান মাহমুদ) নিশ্চিতভাবেই আরও অনেক ম্যাচ খেলত। সে যেভাবে শেষ

টি-টোয়েন্টিতে চাপের ওভারগুলো সামাল দিয়েছে, খুবই প্রশংসনীয় ছিল। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সে (হাসান) বাটলারকে (জস) আউট করে আমাদের জন্য ম্যাচটা উন্মুক্ত করে দেয়।’

খেলোয়াড়দের এমন ছোট মুহূর্তগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন হাথুরু। তিনি বলেছেন, ‘আমি এমন ক্রিকেটারদের খুঁজছি যারা প্রয়োজনের সময় দাঁড়িয়ে যাবে এবং কাজ করে দেবে। এসব জিনিস নিয়মিত করলে তারা আত্মবিশ্বাস পায়। দলও তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে আস্থা পায় এবং ভরসা করতে পারে।’ তবে ব্যস্ত সূচির চাপে ক্রিকেটারদের ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টেও নজর দিতে চান হাথুরু, ‘আমরা তাকে (তাসকিন) গুছিয়ে রাখতে চাই। সে আমাদের স্ট্রাইক বোলারদের একজন, সে বিশ্বমানের। আমরা তাকে (তাসকিন) ও ফিজকে বিশ্রামে রাখতে চেয়েছিলাম। কারণ সামনে অনেক খেলা। এটি আমাদের দলের অন্যান্য ফাস্ট বোলারদের ম্যাচ খেলানোর সুযোগ করে দেবে।’

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com