রেকর্ড হলেও আক্ষেপ গেল না

নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার সাকিব-হৃদয়
রেকর্ড হলেও আক্ষেপ গেল না

পাঁচ দিন পর ৩৬ বছরে পা দেবেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু মাঠের সাকিবের কাছে বয়সটা যে শুধুই সংখ্যা, গতকাল সিলেটে সেটা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার। ব্যক্তিগত অর্জনের বিশ্বরেকর্ডে ভাগ বসালেন, খেললেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। তবুও যে আক্ষেপ নিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়েছে সাকিবকে; তার হতাশাচ্ছন্ন চেহারাই ফুটে উঠেছে সে ছবি। শুধু সাকিবই নন, অভিষিক্ত তরুণ ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়ের আক্ষেপটাও যে একই সূত্রে গাঁথা।

৩৮ ওভারের খেলা চলছিল। গ্রাহাম হিউমের ওয়াইড ইয়র্কার জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব। অনেকটা দূরে থাকা বল তার ব্যাট ছুঁয়ে বন্দি হয় কিপারের গ্লাভসে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার তানভীর আহমেদ। হতাশ হয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন ৯৩ রান করা সাকিব। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৭ রান দূরে ছিলেন তিনি। দিনের শুরুতে উইকেটে এসে দারুণ এক কীর্তিও গড়েছিলেন। কিন্তু শেষটা উদযাপন করা হয়নি তার। সেঞ্চুরি উদযাপনটা যেন ভুলতেই বসেছেন সাকিব। প্রায় দুই বছর আগে জিম্বাবুয়েতে ৯৬ রানে অপরাজিত ছিলেন, সেবারও পাওয়া হয়নি কাঙ্ক্ষিত দশম সেঞ্চুরি। এবার সিলেটেও রয়ে গেল একই আক্ষেপ। ওয়ানডেতে সাকিব সর্বশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ১ হাজার ৩৭১ দিন আগে, ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে টন্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। মাঠের বাইরে বিতর্কিত সাকিব মাঠে ফিরতেই বদলে গেছেন। সিরিজ শুরুর আগেও তাকে ঘিরে ব্যাপক আলোচনায়-সমালোচনা।

কিন্তু গতকাল সিলেটে ব্যাট হাতে সবুজ মাঠের ওপর যেন তুলির আঁচড় এঁকেছেন। ৪৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ার পর নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে গড়েন ৩২ রানের জুটি। ২০তম ওভারে কার্টিস কাম্ফারকে মিডঅনে ঠেলে দিয়ে বিশ্বে তৃতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে ওয়ানডেতে ৩০০ উইকেটের পর ৭ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। ৫০ ওভারের সংস্করণে তার ওপরে আছেন শুধুই পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদি ও শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়সুরিয়া। তবে দ্রুততম দিক থেকে অন্যদের চেয়ে আলাদা তিনি। জয়সুরিয়ার চেয়ে ১৬৯ ও আফ্রিদির চেয়ে ১১৩ ম্যাচ কম লেগেছে বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের। হৃদয়কে নিয়ে ১৩৫ রানের জুটি ভেঙে সাকিব যখন থামলেন, ঠিক ৯৩ রানে, সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। ইংল্যান্ড সিরিজের পর এবার আয়ারল্যান্ড সিরিজ, টানা তিন ওয়ানডেতে ফিফটি, সংখ্যায় যা এখন ৫৩। কিন্তু নার্ভাস নাইন্টিতে আউট এ নিয়ে চতুর্থবার। ওই ইনিংসগুলোকেও শতরানে নিতে পারলে সেঞ্চুরির সংখ্যাটা হতো ১৩। সাকিবকে ফেরানোর আট ওভার পরই হৃদয়কেও ফেরান গ্রাহাম। সেঞ্চুরির খুব কাছ থেকে ফিরেছেন তিনি। অথচ ওই ওভারে মুশফিকুর রহিম সাজঘরে ফেরার পথে হৃদয়কে ভরসা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার দুই বল পরই বোল্ড হন হৃদয়। ফুল লেংথের বল বুঝতে না পারা হৃদয়ের স্টাম্প ভাঙেন গ্রাহাম। উদযাপনের বদলে মলিন মুখে সাজঘরে ফেরেন তিনি। তবে ৯২ রানের এ ইনিংসে দারুণ এক কীর্তি গড়েছেন হৃদয়। অভিষেকে ফিফটি করা তিন বাংলাদেশির মধ্যে তিনিই সবার ওপরে। এর আগে এমন কীর্তি ছিল শুধু নাসির হোসেন ও ফরহান রেজার। এবার দুজনকেই ছাড়িয়ে গেলেন তিনি।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com