
সিরিজ জয়ের পর খেলোয়াড়দের নিয়ে মঞ্চের সামনে সাকিব আল হাসান। কিন্ কোচ হাথুরুসিংহে তখন দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমনের সঙ্গে পরামর্শে ব্যস্ত। দীর্ঘক্ষণের এ আলোচনায় কী হয়েছে, তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে টি-টোয়েন্টির নতুন সূচনার এ দলকে ঘিরে তার যে পরিকল্পনা, সেটারই হয়তো আভাস। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে আসা অধিনায়ক সাকিবও এ দলকে এশিয়ার সেরা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সিরিজ জয়ের ভাবনা ছিল কি...
নাহ, ওভাবে ছিল না। কিন্তু সিরিজ শুরুর আগে কেউ চিন্তাও করিনি আমাদের ম্যাচ জিততে হবে বা এমন কিছু। আমরা খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে চেয়েছি। তিন ম্যাচেই আমরা চেষ্টা করেছি ব্যাটিংয়ে যার যার জায়গা থেকে অবদান রাখা। বোলিংয়ে-ফিল্ডিংটা আমাদের তিনটা ম্যাচেই অসাধারণ ফিল্ডিং হয়েছে। যেটা আমাদের বিশেষত টি-টোয়েন্টিতে যেখানে ২-৪-১০-১৫-২০ রান পার্থক্য তৈরি করে, ওই জায়গায় অনেক বড় টিক মার্ক দিয়েছি।
মুস্তাফিজের তৃতীয় ওভার…
ওই ওভারটাই আসলে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পরপর দুই বলে দুজন সেট ব্যাটসম্যান আউট হওয়াই আসলে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট আমি বলব।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় বিশেষ কি…
তুলনা করতে চাই না কোনো সিরিজের সঙ্গে কোনো সিরিজ। প্রতিটি ম্যাচ জেতা আমাদের জন্য জেতা গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবে খেলে জিতেছি, বিশেষত টি-টোয়েন্টিতে খুব বেশি সময় এভাবে জিতিনি। ওদিক থেকে আমরা সন্তুষ্ট।
তারুণ্যনির্ভর দল বলেই কি সাফল্য…
এখানে যারা খেলছে, বিশেষত টি-টোয়েন্টি সিরিজে; প্রত্যেক খেলোয়াড় বিপিএলে পারফর্ম করেছে। এখানে যারা পাঁচ-ছয়জন ব্যাট করছে, তারা বিপিএলেও টপ রান স্কোরার। যারা সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়া, তারাও এখানে বল করেছে; ওই আত্মবিশ্বাস আসলে থাকে। যেহেতু খুব বেশি গ্যাপ ছিল না। টানা খেলার ভেতরে ছিলাম, ওটা আমাদের সাহায্য করেছে।
টি-টোয়েন্টিতে পরিবর্তনের হাওয়া…
এশিয়া কাপ থেকে বোধ হয় অধিনায়কত্ব শুরু হয়েছে আমার। আমরা হয়তো এখানে ম্যাচ জিতিনি কিন্তু আমরা খুবই ভালো ক্রিকেট খেলেছি। বিশ্বকাপ আমি তো মনে করি আমরা খুবই দুর্ভাগা যে, সেমিফাইনাল খেলত পারিনি। একটা ম্যাচ বেশি জিতলেই সেমিফাইনাল খেলতে পারতাম, ওই সুযোগ আমাদের ছিল। আমরা জানতাম আমরা খুবই ক্লোজ ছিলাম। আমার মনে হয়, পুরো দলেরই বিশ্বকাপ থেকে এই আত্মবিশ্বাস জন্মেছে যে, আমরা বড় দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে অনেক ডাউড ছিল, কিন্তু বিশ্বকাপে পারফরম্যান্স আমাদের বিশ্বাস দিয়েছে বড় দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারি। যখন হোমে খেলা, আত্মবিশ্বাস আরও বেশি ছিল। আমরা জানতাম ভালো খেললে… ইংল্যান্ডের ব্যাটার কিছু কমতি ছিল। যে জায়গায় আমাদের ক্যাপিটালাইজ করার সুযোগ ছিল, করতে পেরেছি। যখন ওদের তিন-চার উইকেট পড়ে গেছে, ওরকম ব্যাটার ছিল না। ওটা আমাদের জন্য এডভান্টেজ ছিল।
সিরিজ জয়ে শান্ত-লিটনদের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স…
আমি ব্যক্তিগত কোনো খেলোয়াড় নিয়ে বলতে চাই না। সবাই অসাধারণ খেলছে। যার যার জায়গা থেকে অবদান রাখা দরকার ছিল, করেছে। দু-একজন হয়তো যতটা আমরা সবসময় ভাবি খেলবে, এতটা একটা দল সবসময় খেলে না। যারা ভালো খেলছে, আমি প্রত্যাশা করছি তারা যতদিন সম্ভব ভালো খেলতে থাকুক। যারা হয়তো এত ভালো অবদান রাখতে পারিনি, তারা যদি ১০-১৫ শতাংশ বেশি রাখতে পারে; তাহলে আমরা আরও ভালো দল হবো।
ফিল্ডিংটা…
অবশ্যই, এটা (সিরিজে বাংলাদেশের ফিল্ডিং) সাধারণ যে কোনো মানুষেরই চোখে পড়েছে। তিন ম্যাচেই যে ধরনের ফিল্ডিং আমরা করেছি। ইংল্যান্ড এত ভালো ফিল্ডিং দল। তবুও আমার মনে হয়, আমরা তাদের থেকে ভালো ফিল্ডিং করেছি। সেই জায়গা থেকে অনেক বড় একটা টিক মার্ক। আমি যদি সবকিছু বিবেচনায় রাখি, আমাদের সবচেয়ে বড় উন্নতি হয়েছে ফিল্ডিংয়ে। যেটা আমাদের সবসময়ই করা উচিত। আমাদের দলের অন্তত পরিকল্পনা আছে, আমরা যেন ফিল্ডিংয়ে এশিয়ার সেরা দল হতে পারি। আমার মনে হয় না, আমরা খুব বেশি দূরে আছি। এই দলটা সম্ভবত এশিয়ার সেরা ফিল্ডিং দল।