৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। প্রথম গ্রুপ ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারের পর আর পেছন ফিরে তাকাননি লিওনেল মেসিরা। একের পর এক ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ হাতে নেওয়ার পর থেমেছেন। কীভাবে সম্ভব হয়েছে এমন অগ্রযাত্রা। অনেকেই বলছেন আর্জেন্টিনার সফল অভিযানে অনুপ্রেরণা হয়ে ছিল একটি গান।
কাতার বিশ্বকাপে মেসি এবং তার সতীর্থদের উচ্ছ্বাস প্রকাশের ভঙ্গিতে কিছু বিশেষত্ব ছিল। প্রায় প্রত্যেক ম্যাচ শেষে বা গোল হওয়ার পর দেখা গেছে সে উচ্ছ্বাস। দুই হাত ওপরে তুলে গ্যালারিতে বসে থাকা সমর্থকদের উদ্দেশে নির্দিষ্ট ছন্দে হাত নেড়েছেন মেসি। তালে তালে দুলেছে তার শরীর। অভিনব উচ্ছ্বাসের অর্থ আগেই জানা গেছে। একটি বিশেষ গানকে বিশ্বকাপের সময় আঁকড়ে ধরেছিলেন মেসিরা। সেই গানের তালে তালে আনন্দে লাফাচ্ছিলেন। নাচছিলেন। গানটির নাম ‘মুচাচোস’। স্প্যানিশ ভাষায় এ শব্দের অর্থ ‘তারুণ্য’।
এ গানই ছিল বিশ্বকাপে মেসিদের অনুপ্রেরণা। গানটি লিখেছেন কোনো এক আর্জেন্টিনীয় সমর্থক। প্রথমে নাম জানা যায়নি। পরে ভাইরাল হওয়ার পর জানা যায় লোকটির নাম ফার্নান্দো রোমেরো। স্বয়ং মেসি বলেছেন, ‘ভক্তদের বানানো এটাই তার শোনা সেরা গান।’ গানের ছত্রে ছত্রে যেমন মেসি আছেন, তেমনি আছেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। আর আছে সাড়ে ৪ কোটি আর্জেন্টাইনের বিশ্বকাপ ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন। ১৯৮২ সালে ফকল্যান্ড যুদ্ধে ব্রিটেনের কাছে হেরে যাওয়া আর্জেন্টাইন সেনাদের লড়াইয়ের কথাও রয়েছে এই ‘থিম সং’-এ। আছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের কথাও। গানটির কয়েক লাইন বাংলায় অনুবাদ করলে এরকম হয়, ‘আমাদের আশা আবার জেগে উঠেছে। আমরা তৃতীয় কাপটাও জিততে চাই। আমরা হতে চাই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।’ ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর ২০২১ সালে কোপা আমেরিকা জয়ের সময় গানটি বেঁধেছিলেন ফের্নান্দো। তিনি বলেন, ‘কোপা জেতার পর আমার মনে হয়েছিল, দিয়েগো আমাদের সঙ্গেই আছেন। তাই আমি এমন একটা গান বানাতে চেয়েছিলাম, যেখানে দিয়েগো থাকবেন। আমরা সবাই সেই গান গাইতে পারব।’ মুচাচোস গানে লেখা হয়েছে, ‘আকাশ থেকে আমরা দিয়েগোকে দেখতে পাচ্ছি। তিনি তার মা এবং বাবার সঙ্গে বসে আমাদের দেখছেন। লিয়োনেলকে তিনি আরও একবার বিশ্বকাপ জেতার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন।’