
বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হয়েছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। রোববার রাতে ভ্যালেন্সিয়ার মাঠ মেস্তায়া স্টেডিয়ামে বর্ণবাদের শিকার হন তিনি। এমন ঘটনা এবারই প্রথম নয়। মায়োর্কা, রিয়াল ভায়াদোলিদ, আতলেতিকো মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার মাঠেও এবারের মৌসুমে বর্ণবাদের শিকার হয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস। প্রতিকার চেয়েও বিচার না পাওয়ায় স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন ও লা লিগা কর্তৃপক্ষকে সরাসরি দোষারোপ করেন তিনি। বিতর্কের জল অনেক দূরে গড়িয়েছে। যে সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল স্প্যানিশ পুলিশ, তাদের চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঘটনার পর বর্ণবাদী আক্রমণ নিয়ে উল্টো ভিনিসিয়ুসকেই দোষারোপ করেছিলেন হাভিয়ের তেবাস। লা লিগা সভাপতির মন্তব্যের পর জাপানে জি-৭ সম্মেলনে গিয়েও ভিনিসিয়ুসকে সমর্থন জানিয়ে বর্ণবাদ বন্ধে ফিফাকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে করা পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেন। মুখ খুলেছেন কার্লো আনচেলত্তিও। তিনি বলেছেন, ‘আজ আমি ফুটবল নিয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। এখানে যা হয়েছে, সেসব নিয়ে বলতে চাই। পরাজয়ের চেয়ে এটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আজ এখানে যা হয়েছে, তা উচিত হয়নি। এ লিগে খুব বাজে কিছু ব্যাপার হচ্ছে।’ বর্ণবাদের বিরুদ্ধ লা লিগার অবস্থানকে নড়বড়ে মনে করছেন আনচেলত্তি। তিনি বলেন, ‘এটা অযৌক্তিক একটি লাল কার্ড, কারণ এখানে আক্রমণাত্মক কিছু ঘটেনি। আমার মতে, ভিনিসিয়ুস এখন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার, সবচেয়ে শক্তিশালী ফুটবলার। লা লিগার ভয়ংকর সমস্যা আছে। আমার মতে, এ ধরনের বর্ণবাদের ঘটনায় খেলা বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ, স্রেফ একজনের ব্যাপার নয় এটি, গোটা স্টেডিয়াম মিলে একজন ফুটবলারকে অপমান করছে। খেলা বন্ধ করা উচিত ছিল। আমরা যদি ৩-০ গোলে জয়ের পথে থাকতাম, তবু একই কথা বলতাম। আর কোনো উপায় নেই এখানে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রেফারিকে বলেছিলাম খেলা বন্ধ করে দিতে। সে বলল, ‘লিগের বর্ণবাদবিরোধী প্রটোকল হলো আগে দর্শকদের জানিয়ে দেওয়া এবং এর পরও তারা তা করতে থাকলে খেলা বন্ধ করা।’ আনচেলত্তি বলেন, ‘ভিনিসিয়ুস খেলা চালিয়ে যেতে চায়নি। আমিও ওকে তখন বলি যে, ‘খেলা বন্ধ করে দেওয়া ঠিক হবে না। এখানে তো তোমার দায় নেই! তুমি কোনো দোষ করোনি, বরং তুমি অন্যায়ের শিকার।’ এরপর সে খেলা চালিয়ে যায়। ভিনিসিয়ুসের অবশ্যই মন খারাপ। তার কষ্ট হচ্ছে, তবে রাগ নেই। তার ওই প্রতিক্রিয়া খুবই স্বাভাবিক। কোনো সংশয় নেই। গোটা স্টেডিয়াম বর্ণবাদী আচরণ করছিল। দেখা যাক কী হয়। আমি কৌতূহল নিয়ে অপেক্ষায় আছি। তবে কিছুই হবে না। সাধারণত, কিছুই করা হয় না।’ রিয়ালের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া বলেন, ’আমরা এটা মেনে নিতে পারি না, কোনোভাবেই সহ্য করতে পারি না। ভিনি খেলে গেছে বলেই আমরা খেলেছি। ভিনি যদি মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিত, আমিও তার সঙ্গে মাঠ ছেড়ে যেতাম। এই ধরনের ব্যাপার অবশ্যই মেনে নেওয়ার মতো নয়।’