আইরিশ ব্যাটার লরকান টাকার কিংবা পল স্ট্যার্লিংয়ের স্টাম্প ভেঙে ঈগলের মতো ডানা মেলে উড়ছেন তাসকিন আহমেদ। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাসকিনদের উড়ার দৃশ্য এখন আর নিত্যনতুন নয়। মাঠে নামলেই এভাবে উড়বেন, এমন এক অলিখিত নিয়ম বানিয়ে ফেলেন বাংলাদেশ পেসাররা। প্রত্যেক ম্যাচেই প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের স্টাম্প দুমড়ে-মুচড়ে দেন তারা। এ পথ ধরে নিজেদের বিশ্বসেরা কাতারে তুলতে চান তাসকিনরা। গতকাল ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে ঠিক এ কথাটাই বলেছেন তাসকিন। স্বপ্ন দেখেন বিশ্বসেরা পেস ইউনিট হওয়ার।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ের অন্যতম কারিগর তো তাসকিনরা। দুই ওভারে ১৬ রানে ৪ উইকেট—ক্যারিয়ারসেরা বোলিং তাসকিনের। তবে ম্যাচের প্রথম ব্রেক থ্রুটা তো এসেছে তরুণ পেসার হাসান মাহমুদের কল্যাণে। মোস্তাফিজুর রহমান কোনো উইকটে না পেলেও দুই ওভারে ১৬ রান দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঠিকই চেপে রেখেছিলেন। পেসারদের উন্নতির রেখাটা তুলে ধরে তাসকিন বলেছেন, ‘ধীরে ধীরে আমরা প্রসেস অনুযায়ী উন্নতি করতে পারছি এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ভুলত্রুটিগুলো বারবার রিপিট হচ্ছে কি না, তা বের করাটা গুরুত্বপূর্ণ।’ সর্বশেষ দুই বছরের তুলনায় সম্প্রতি দলগত উন্নতি হয়েছে বলে মনে করেন তাসকিন। তার ব্যাখ্যা, ‘আমরা ভুলত্রুটিগুলো আগের চেয়ে যে কোনো সংস্করণে কমিয়ে আনছি। আমাদেরও স্বপ্ন আমরা বিশ্বের সেরা দল হব, সে প্রসেস অনুযায়ী এগোচ্ছি এবং সেটা আস্তে আস্তে মাঠেও দেখা যাবে। এভাবে যদি ধারাবাহিকতা থাকে সামনে আরও বড় বড় ইভেন্ট আছে ওগুলোতেও প্রতিফলন ঘটবে ইনশাল্লাহ।’ বড় বড় ইভেন্টে ভালো করতে হলে চ্যালেঞ্জটাও যে কম নয়, তা ভালোই জানা তাসকিনের।
তবে সবাই ব্যক্তিগতভাবে উন্নতি করলে সেটাও কঠিন নয় বলেই মনে করেন ২৭ বছর বয়সী এ পেসার, ‘(পেস বোলিং) ইউনিট হিসেবে যদি সবাই বিশ্বমানের হই, তাহলে এ ইউনিটকে সামলাতে কিন্তু একটু সমস্যাই হবে। বড় বড় দলে একটা নয়, ৪-৫টা বিশ্বসেরা বোলার থাকে, তো একইভাবে আমরাও চাচ্ছি আমাদেরও এরকম হোক। যেহেতু আমরা সবাই পরিবারের অংশ ফাস্ট বোলাররা, ভাইয়ের মতো। একে অপরকে সাহায্য করছি এবং সবাই সবার ভালো চেয়েছি, যা শেষ দুই-আড়াই বছরে উন্নতিও চোখে পড়ছে। এখনো আমাদের পরের ধাপে যাওয়া বাকি। আমি মনে করি, আমরা সঠিক পথে আছি, প্রসেসও খুব ভালো, মাইন্ডসেটটাও খুব ভালো। ইনশাল্লাহ আমাদের এ স্বপ্নটাও পূরণ হবে।’ বিশ্বসেরা হতে হলে কী করতে হবে সেটাও বলে দিয়েছেন তাসকিন। বেশি বেশি স্পোর্টিং উইকেটে খেলার বিকল্প দেখছেন না এ পেসার। তার ভাষ্যমতে, ‘বড় ইভেন্টগুলো স্পোর্টিং কন্ডিশনেই হয়। যত বেশি ভালো উইকেটে খেলা হবে, ঘরোয়া কিংবা আন্তর্জাতিক, আমাদের জন্যই ভালো হবে। কারণ স্পোর্টিং কন্ডিশনে ব্যাটসম্যান-বোলার দুজনেরই একটু ভালো সুযোগ থাকে। যত বেশি স্পোর্টিং কন্ডিশনে খেলব, তত বোলারদেরও চ্যালেঞ্জ বেশি। এ রকম ভালো উইকেটে যখন ভালো করতে পারব, আত্মবিশ্বাসটা বেশি থাকবে, চাইব এমন উইকেটেই খেলা হোক।’ তাসকিনের চাওয়া যে অবশেষে বাংলাদেশ বুঝচ্ছে, তার প্রমাণ সিলেট ও চট্টগ্রামের উইকেট।