হারানো কঠিন, চাইব জিতুক

ক্রীড়া প্রতিবেদক
হারানো কঠিন, চাইব জিতুক

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টপ র‌্যাঙ্কড লেবানন ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী। পশ্চিম এশিয়ার এ দেশের বিপক্ষে এক যুগ আগে জয়ের সুখস্মৃতি আছে বাংলাদেশের। সাফে কেমন হতে পারে বাংলাদেশের লেবানন পরীক্ষা?—ওই ম্যাচের গোলদাতা জাহিদ হাসান এমিলি ও মিঠুন চৌধুরীর সঙ্গে আলাপে সেটা জানার চেষ্টা করা হয়েছে।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে দুই লেগে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-লেবানন। ২৩ জুলাই বৈরুতে ৪-০ গোলে হেরে আসে বাংলাদেশ। ঢাকায় লাল-সবুজদের জয় ২-০ গোলে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথমার্ধ ছিল গোলশূন্য। বিরতির পর, ৫৬ মিনিটে মিঠুন চৌধুরীর গোলে লিড পায় স্বাগতিকরা। ৮৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জাহিদ হাসান এমিলি।

দুই গোলদাতা মিঠুন ও এমিলির মাঠে নামা নিয়েই নানা জটিলতা তৈরি হয়েছিল। জাতীয় দলের ক্যাম্প থেকে পাওয়া ছুটিতে মানিকগঞ্জে খ্যাপ খেলতে গিয়েছিলেন দুজন। যে কারণে তাদের দল থেকে বাদ দেওয়ার জোর দাবি ওঠে। শেষ পর্যন্ত কোচ নিকোলা ইলিয়েভস্কির অনড় অবস্থানের কারণে মাঠে নামানো হয় দুই ফরোয়ার্ডকে।

‘ম্যাচের আগে আমরা খুব বাজে অবস্থায় ছিলাম। প্রথমত, দলকে হোটেলের পরিবর্তে রাখা হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ডরমিটরিতে। মানিকগঞ্জে খেলতে যাওয়ার কারণে আমার ও এমিলির খেলা অনিশ্চিত ছিল। কোচ ইলিয়েভস্কির কারণে আমরা খেলতে পেরেছি। জ্বরের কারণে ওয়ালী ফয়সাল সে ম্যাচ খেলতে পারেনি। মাঠে নামার পর আমরা বাইরের সবকিছু ভুলে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। ম্যাচে তার সুফলও আসে’—গতকাল কালবেলাকে বলছিলেন মিঠুন চৌধুরী। নারায়ণগঞ্জ থেকে উঠে আসা জাতীয় দলের সাবেক এ স্ট্রাইকার আরও বলেন, ‘লেবানন দলটা বেশ শক্তিশালী ছিল। শারীরিকভাবেও আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিলেন দলটির ফুটবলাররা। সঠিক কৌশল ও ভালো কিছু করার প্রতিজ্ঞা থাকলে প্রতিপক্ষের সে অগ্রগামিতাকেও জয় করা যায়। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে লেবানের বিপক্ষে ম্যাচটা বেশ কঠিন হবে। আমি বিশ্বাস করি, সঠিক পরিকল্পনা ও ভালো ফলাফলের জন্য ফুটবলারদের প্রতিজ্ঞা থাকলে এখনো দেশটির বিপক্ষে ভালো করা সম্ভব।’

মিঠুন চৌধুরীর কথায় বাংলাদেশি ফুটবলামোদীরা কিছুটা আশাবাদী হতে পারেন। কিন্তু জাহিদ হাসান এমিলির কথা—সে আশায় গুড়ে বালি ঢালবে। জাতীয় দলের সাবেক এ তারকার কথায়, ‘বাংলাদেশ দলের বর্তমান যে অবস্থা, তাতে লেবাননের মতো দলকে হারানো বেশ কঠিন। ফুটবলার হিসেবে অবশ্যই চাইব বাংলাদেশ এ ম্যাচ জিতুক; কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে।’ বর্ণিল ক্যারিয়ারে আবাহনী, মোহামেডান, শেখ জামাল, শেখ রাসেলের মতো দলে খেলা এমিলি আরও বলেন, ‘আমরা যখন খেলেছি ওই সময়ের লেবানন ছিল বেশ শক্তিশালী দল। আমার বিশ্বাস, লেবানন দল হিসেবে এখনো শক্তিশালী। ফিফা র্যাঙ্কিং কিন্তু সে কথাই বলছে। সিশেলসের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ দুটি দেখেছি। এ ম্যাচের নৈপুণ্যের আলোকে দলকে নিয়ে আশাবাদী হওয়া কঠিন।’

নিকট অতীতে বাংলাদেশের নৈপুণ্যের দিকে দৃষ্টি দিলে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে আশাবাদী হওয়া কঠিন। ২০২২-২৩ মৌসুমে কম্বোডিয়া, নেপাল ও সিশেলসের বিপক্ষে খেলা চার ম্যাচে দুটি করে জয় ও হার বাংলাদেশের। ২০২১-২২ মৌসুমের অবস্থা আরও করুণ—১৫ ম্যাচে জয় মাত্র দুটি, পাঁচ ড্রয়ের বিপরীতে হার আটটি! ২১ জুন বেঙ্গালুরুতে শুরু হতে যাওয়া আসরে বাংলাদেশ কেমন করবে সেটা সময়ই বলবে। পারিপার্শ্বিক অবস্থায় আশাবাদী হওয়া কঠিনই বটে!

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com