
আর্জেন্টাইন অ্যারিয়েল কোলম্যান জীবিকার তাগিদে বাংলাদেশে আসেন ২০০৫ সালে। গত দেড় যুগের অধিকাংশ সময় বাংলাদেশেই কাটিয়েছেন। লাল-সবুজের দেশটি এখন তার ‘দ্বিতীয় বাড়ি’। জন্মস্থান আর্জেন্টিনার সঙ্গে ‘দ্বিতীয় বাড়ি’র সাম্প্রতিক সম্পর্কোন্নয়নে উচ্ছ্বসিত শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ট্রেনার।
জাতীয় দলের সাবেক কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানির কোচিং স্টাফ হিসেবে বাংলাদেশে আসা। ক্রুসিয়ানি অধ্যায় শেষ হওয়ার পরও জাতীয় দলে কাজ করেছেন। বাংলাদেশকে চেনাজানার সূত্র ধরে ঘরোয়া ফুটবলে যুক্ত হন অ্যারিয়েল কোলম্যান। এখানে থাকা, কাজ করার সুবাদে স্থানীয়দের আর্জেন্টিনা প্রীতি আগে থেকেই দেখে আসছেন। দেখেছেন গত কাতার বিশ্বকাপ চলাকালে উম্মাদনাও। ঢাকার উম্মাদনা ১৬ হাজার ৭৬৩ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বুয়েনস আয়ার্সে পৌঁছে গেছে। সেই থেকে বাংলাদেশের প্রতি আর্জেন্টাইনদের কৌতূহলও হু-হু করে বেড়েছে। সে কৌতূহল মেটাতে দেশটির নানা গণমাধ্যমে অনলাইনের মাধ্যমে নিয়মিতই হাজির হতে দেখা গেছে কোলম্যানকে। বাংলাদেশের প্রতি আর্জেন্টাইনদের কৌতূহল ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে। ঢাকায় দূতাবাস খোলার পর কূটনৈতিক সম্পর্কে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে দুই দেশ। তাতে কোলম্যানের মনে বইছে বসন্তের হাওয়া।
‘২০০৫ সাল থেকে এখানে কাজ করছি। কাজের সূত্রে ঢাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছি। আমি বরাবরই বলে আসছি, বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি। জন্মভূমির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নটা আমার জন্য দারুণ’— কালবেলাকে বলছিলেন অ্যারিয়েল কোলম্যান। ঢাকায় দূতাবাস খোলার পর থেকেই দুই দেশের ফুটবলীয় সম্পর্ক নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। কোলম্যান মনে করেন, এ দেশের ফুটবল উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে আর্জেন্টিনা, ‘বাংলাদেশে প্রচুর ফুটবল প্রতিভা রয়েছে। এ প্রতিভা বিকাশে ভূমিকা রাখতে পারে আর্জেন্টিনা। ট্রেনিং সুবিধা দিয়ে এখানকার ফুটবলারদের সহায়তা করতে চায় আর্জেন্টিনা ও দেশটির ক্লাবগুলো। দুই দেশের ফেডারেশন একত্রে কাজ করলে তা বাংলাদেশের ফুটবল উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আমি চাই আর্জেন্টিনা এ দেশের ফুটবলে ভূমিকা রাখুক।’
বিশ্বকাপ চলাকালে ঢাকার উম্মাদনার খবর-চিত্র ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে অ্যারিয়েল কোলম্যানও বেশ ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন। এ সম্পর্কে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের এ ট্রেনার বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনা থেকে অনেক বন্ধু ও ঘনিষ্ঠ কল করে ঢাকার গল্প শুনতে চাইতেন। এখানকার ফুটবল ও দেশ সম্পর্কে জানতে চাইতেন। বিভিন্ন আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম স্থানীয়দের কৌতূহল মেটাতে নানা খবর ও ফিচার প্রকাশ ও প্রচার করেছে নিয়মিত। এ জন্য আমাকেও বেশ ব্যস্ত সময় কাটাতে হয়েছে; এখনো হয়। বিষয়টা আমি দারুণ উপভোগ করেছি।’
২০১১ সালে ঢাকায় নাইজেরিয়ার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলে গেছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। এ সুপারস্টারকে আরেক দফা ঢাকায় আনার জোর গুঞ্জন ডালপালা মেলছে বিশ্বকাপের পর থেকেই। কোলম্যান মনে করেন, দুই দেশের সম্পর্ক ও ভালোবাসার আদান-প্রদান মেসিদের ঢাকা আসার পথটা ক্রমেই প্রশস্ত করছে। বিশ্বকাপজয়ী সাদা-নীল ডোরাকাটা জার্সিধারীদের ফের ঢাকায় দেখার জন্য বাংলাদেশি সমর্থকদের মতোই উম্মুখ হয়ে আছেন কোলম্যান।