সাগরিকায় বাংলাদেশ-ভারতের দুদিনের নেট অনুশীলনে ছিল দুরকম চিত্র। ভারতের নেটে বিরাট কোহলি, ঋষভ পন্তরা আগ্রাসী ক্রিকেটের ইঙ্গিত দিলেন। বাংলাদেশের নেটে লিটন দাস, মুশফিকুর রহিমদের মনোযোগ ছিল প্রথাগত ক্রিকেটে। নেটে কোহলিরা আগ্রাসী মনোভাব দেখালেও চট্টগ্রাম টেস্টে তারা নিজেদের প্রথাগত ক্রিকেট খেলবেন—এমন বিশ্বাস বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর। চট্টগ্রাম টেস্ট শুরুর আগে গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছেন তিনি। সাম্প্রতিক টেস্ট ক্রিকেটে বাজবল প্রথা চালু করেছে ইংল্যান্ড। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি সিরিজে সাফল্যও পেয়েছেন বেন স্টোকসরা। ইংলিশদের ‘বাজবলের’ প্রশংসা করেছেন ডমিঙ্গো, ‘ওরা (ইংল্যান্ড) যেভাবে খেলছে, সেটা অবিশ্বাস্য ও রোমাঞ্চকর। ওরা খেলাটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের কৃতিত্ব দিতেই হয়।’ ডমিঙ্গোর দলের পরিকল্পনায় নেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং। বাংলাদেশ যে এখনো টেস্ট ম্যাচ জিততে চাওয়ার মতো দল হয়ে ওঠেনি তা এ প্রোটিয়া কোচের কথা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, ‘আমার মনে হয় না, আমরা ইংল্যান্ডের মতো ব্যাট করব; এই মুহূর্তে নয়। প্রথমত আমাদের হার এড়ানোর উপায় খুঁজতে হবে। এরপর জয়ের পথ খুঁজতে হবে। এই মুহূর্তে আমরা খুব সহজেই এই সংস্করণে ম্যাচ হেরে যাই।’
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পরিসংখ্যানও সে কথাই বলছে। যেখানে ড্র করাই সাকিব আল হাসানদের সবচেয়ে বড় সাফল্য, সেখানে জয়ের চিন্তা করাটা এক রকম বিলাসিতা। বাংলাদেশ তাই আপাতত আগ্রাসী ক্রিকেট খেলবে না, নিশ্চিত করেছেন ডমিঙ্গো। একই সঙ্গে ভারতের কাছ থেকেও আক্রমণাত্মক খেলা আশা করেন না তিনি, ‘আমি নিশ্চিত নই ভারত কীভাবে খেলবে। টেস্ট খেলার ক্ষেত্রে তারাও অনেকটা প্রথাগত দল।’ ভারতের যে ব্যাটিং লাইনআপ, তাতে তারা চাইলে ইংল্যান্ডের মতো খেলতে পারে—এতে দ্বিমত নেই ডমিঙ্গো, ‘তাদেরও ক্রিকেটার আছে খুব দ্রুত ম্যাচটা নাগালের বাইরে নিয়ে যাওয়ার। ইংল্যান্ড যেভাবে খেলছে, আমার মনে হয় না ভারত সেভাবে খেলবে। মনে হয় না এটা তাদের টেস্ট খেলার ধরন।’
ভারতের টেস্ট খেলার ধরন প্রথাগত হলেও বাংলাদেশের মতো দলের বিপক্ষে তারা চাইলেই আক্রমণাত্মক খেলতে পারে। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আসা ভারতীয় অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও সে রকম ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ‘এটা নিশ্চিত থাকতে পারেন, আপনারা আমাদের কাছ থেকে অনেক আগ্রাসী ক্রিকেট দেখবেন।’ রাহুলের কথা যদি আজ থেকে শুরু হওয়া চট্টগ্রাম টেস্টে দেখা মিলে, তাহলে বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে। প্রতিপক্ষকে মোকাবিলায় বাংলাদেশের পরিকল্পনা যেমন থাকতে পারে, তা নিয়ে ডমিঙ্গো বলেছেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, ক্রিকেটাররা যেন শৃঙ্খলা মেনে চলে, ধৈর্য ধরে খেলে। চাপের মুখে যেন ছেলেরা শান্ত থাকে।’ ডমিঙ্গো চাওয়া চাপে শিষ্যদের শান্ত থাকা। বড় দলের বিপক্ষে এর আগেও বেশ কয়েকবার পঞ্চম দিনে গিয়ে চাপে পড়ে ম্যাচ হাতছাড়া করেছে টাইগাররা। এবার প্রতিপক্ষ ভারত, একই ভুল যেন পুনরায় না ঘটে, সেটাই নিশ্চিত করতে চাইবে স্বাগতিকরা।