দুই অর্ধে দুই রকম খেলা বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ায় নেতিবাচক বিষয়গুলো ঢাকা পড়ে যায়। দুই ম্যাচ সিরিজের পরের ম্যাচটা ড্র করলে অন্তত মান বাঁচত। সিলেটে গতকাল সিশেলসের কাছে হেরেই গেল টিম বাংলাদেশ!
দুই ম্যাচ সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ হওয়া সিরিজ থেকে প্রাপ্তি বলতে অভিজ্ঞতা। সিরিজ আয়োজনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল র্যাঙ্কিং বাড়ানো। ১-০ গোলের জয়ের পর ১-০ গোলে হার। ১৯৯ স্থানে থাকা সিশেলসের বিপক্ষে ১৯২-এ থাকা বাংলাদেশের এ ফল নিশ্চয় রেটিং পয়েন্ট বাড়াবে না। তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, র্যাঙ্কিংয়ে ইতিবাচক কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
রেটিং-র্যাঙ্কিংয়ের অঙ্কের বাইরে সিশেলস সিরিজ ছিল দেশের ফুটবলের জন্য বড় চপেটাঘাত! কারণ, ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রটি শৌখিন ফুটবলারদের নিয়ে গড়া। যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন পেশায় জড়িত, তারা অবসরে ফুটবল খেলেন। জাতীয় দলে খেলার জন্য কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে জড়ো হন তারা। বিপরীতে বাংলাদেশ ফুটবলে পুরো পেশাদারিত্ব না থাকলেও এখানে ফুটবল লোভনীয় পেশা। মাঝারি মানের খেলোয়াড়ও বার্ষিক ৩০-৪০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নেন। শীর্ষ খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে অঙ্কটা দ্বিগুণেরও বেশি। দুই দেশের এমন বৈপরীত্যের কারণে বাংলাদেশ সিশেলসকে হারাবে—এমনটা প্রত্যাশিতই ছিল। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে সে প্রত্যাশা ধাক্কা খাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফুটবলামোদীদের হতাশা ছিল লক্ষণীয়।
৬২ মিনিটে মাইকেল মানসিয়ানের পেনাল্টি গোলে হারা ম্যাচ নিয়ে হতাশ বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও, ‘ম্যাচে আমাদের ভুল ছিল। আমরা একই ভুল বারবার করেছি। পেনাল্টি দিয়েছি বোকার মতো।’
এ ম্যাচে অভিষেক হয় বাংলাদেশি লেফট-ব্যাক আলমগীর মোল্লার। প্রথম ম্যাচে ৬০ মিনিট পর জামাল ভূঁইয়াকে তুলে নেন কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা; গতকাল বেঞ্চে থাকা বাংলাদেশ অধিনায়ককে ম্যাচের ৫৭ মিনিটে মাঠে পাঠান এ কোচ।
এদিন বাংলাদেশ বেশকিছু সুযোগ সৃষ্টি করে। শুরুটা হয়েছিল সপ্তম মিনিটে রবিউল হাসানের শটে; এ প্রচেষ্টা অবশ্য ক্রসবার উঁচিয়ে বাইরে যায়। দ্রুতই পাল্টা জবাব দেয় সিশেলস—ম্যাক্সিমের ফ্রি-কিক অবশ্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে গেছে। ১৩ মিনিটে সুমন রেজার পাসে মজিবুর রহমান জনির শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে দিক পাল্টায়। ১৮ মিনিটে রিমন হোসেনকে তুলে আলমগীর মোল্লাকে জাতীয় দলে অভিষেক করান ক্যাবরেরা। ২২, ২৩ ও ৪৫ মিনিটে সুযোগ সৃষ্টি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।
শেষদিকে বদলি হিসেবে নেমে দুটি সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন আগের ম্যাচে লাল-সবুজ জার্সিতে অভিষিক্ত এলিটা কিংসলে। ৭৭ মিনিটে সোহেল রানার দারুণ পাসে বক্সের মধ্য থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শট বাইরে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। ৮০ মিনিটে বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়েও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি ফুটবলার।