সৈয়দ বোরহান কবীর
প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৯:২০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

দূতাবাসপল্লিতে রাজনীতিকদের ভিড় কেন

দূতাবাসপল্লিতে রাজনীতিকদের ভিড় কেন

প্যারিসে এক ধরনের পেশা আছে। এ পেশাকে বলা হয় ‘পিকচার গাইড’। যে কোনো ছবি দেখে তার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এই গাইডরা বাতলে দেন। যে কোনো ছবির ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ দিতে তাদের জুড়ি মেলা ভার। বাংলাদেশে এরকম বিশেষজ্ঞ বা বিশ্লেষক নেই। থাকলে নির্ঘাৎ আমার মতো অনেকেই এসব গাইডের কাছে যেতেন দুটি ছবির ব্যাখ্যার জন্য। একটি ছবি গত ২২ মার্চ বুধবারের। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ছয় আওয়ামী লীগ নেতার হাস্যোজ্জ্বল ফটোসেশন। এ ছবিতে আওয়ামী লীগের সব নেতাই কেতাদুরস্ত পোশাক। স্যুট-কোট পরিহিত। মুজিব কোটে কেউ নেই (পোশাকে কী আসে যায়)। তাদের চেহারার মধ্যে একটা বিজয় বিজয় ভাব। যেন মস্ত কিছু অর্জন করেছেন। দ্বিতীয় ছবিটা ১৬ মার্চ ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে বিএনপির পাঁচ নেতার হাস্যোজ্জ্বল ছবি। এ ছবিতে বিএনপি নেতাদের হাসিটা বেশ চওড়া। ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি ভারত জয়ের পর যেমন প্রশস্ত হাসি দিয়েছিলেন। বিএনপি নেতাদের হাসিটা অনেকটা সেই আদলের। বিএনপি নেতারা কি তাহলে ভারত জয় করলেন? ওইদিন ভারতীয় দূতাবাসে নৈশভোজে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিবসহ পাঁচ নেতা। বেশ কিছুদিন ধরেই আওয়ামী লীগ সরকার আর যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে নানা কথা শোনা যায়। সর্বশেষ গত ২০ মার্চ মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারকে রীতিমতো তুলোধোনা করা হয়েছে। এর মাত্র দুদিন পর আওয়ামী লীগ নেতাদের মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় মধ্যাহ্নভোজ কী বার্তা দিল? কে কাকে বশে আনল? আবার বলা হয়, বিএনপি আন্দোলনে সুবিধা করতে পারছে না ভারতের জন্য। বিএনপি নেতারাও একাধিক বক্তৃতায় বলেছেন—‘ভারতই এ সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে।’ কোনো কোনো নেতা তো আওয়ামী লীগ সরকারকে ভারতের পুতুল সরকার বলতেও দ্বিধা করেননি। এমন ভারতবিদ্বেষী বিএনপির ‘দেশপ্রেমিক’ নেতারা ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বাসায় নৈশভোজে কী পেলেন? তারা কি ভারত জয় করলেন, নাকি ভারতের ‘পুতুল’ হওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন? বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ‘বন্ধু’ রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব এবং প্রভুত্ব কি আবার প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে? বাংলাদেশের রাজনীতির ভাগ্য কি দূতাবাস পল্লিতেই নির্ধারিত হবে? কিন্তু আমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা তো এরকম ছিল না। স্বাধীনতার পর সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের নেতারা মাথা উঁচু করেই দাঁড়িয়েছিলেন। বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট রবার্ট ম্যাকনামারা বাংলাদেশ সফরে এলেন। তাজউদ্দীন আহমদকে আমলারা বললেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে মন্ত্রীরই যাওয়া উচিত। তাজউদ্দীন আহমদ বিরক্ত হয়েছিলেন। বলেছিলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট পদমর্যাদায় মন্ত্রীর অনেক নিচে। একজন যুগ্ম সচিবকে তিনি পাঠিয়েছিলেন ম্যাকনামারাকে রিসিভ করার জন্য। ৭ জুন ১৯৭২ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রদত্ত ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমরা স্বাধীন দেশ। ভারত হোক, আমেরিকা হোক, রাশিয়া হোক, গ্রেট ব্রিটেন হোক কারও এমন শক্তি নাই যে, আমি যতক্ষণ বেঁচে আছি ততক্ষণ আমার দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে।’

সত্যিই বঙ্গবন্ধু যতদিন বেঁচেছিলেন ততদিন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কেউ নাক গলাতে পারেনি। নাক গলাতে না পারলেও তারা ষড়যন্ত্র করেছে। ৭৫-এর ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে আন্তর্জাতিক মদদ এবং ষড়যন্ত্রের কথা এখন সবাই জানে। মার্কিন দলিলপত্রেই তখন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মিস্টার বুস্টারের ভূমিকার কথা জানা যায়। ৭৫-এর পর থেকেই পশ্চিমা দূতাবাসগুলো ক্ষমতাবান হতে শুরু করে। আস্তে আস্তে তারা মোড়ল মুরুব্বি বনে যান। বাংলাদেশের ক্ষমতাবদলের লাটাই চলে যায় দূতাবাসপাড়ায়। অনির্বাচিত স্বৈরশাসকরা মনে করে, জনগণ নয়, রাষ্ট্রদূতরাই ক্ষমতার উৎস। বিদেশি প্রভুদের খুশি রাখলেই ক্ষমতার মসনদ ঠিকঠাক থাকবে এরকম একটি ধারণা বদ্ধমূল হয়ে যায় জনভিত্তিহীন শাসকদের মধ্যে। শুরু হয় বিদেশি প্রভুদের পদলেহনের সংস্কৃতি। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে খুশি না করতে পারলে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না এমন একটি চিন্তা রাজনীতিতে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যায়। এর পেছনে অবশ্য অর্থনৈতিক কারণও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ৭৫-এর পর বাংলাদেশের অর্থনীতি পরনির্ভরতার পথে যাত্রা শুরু করে। বাজেট, উন্নয়ন সবকিছুই দাতাদের দয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ভিক্ষা নিলে তো প্রভুদের কথা শুনতেই হবে। শর্তের জালে বন্দি হয় আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি এবং উন্নয়ন ভাবনা। সাহায্য বা ঋণের চেয়ে শর্তের ফর্দ লম্বা হতে থাকে। কিন্তু এখান থেকেই বাংলাদেশকে ঘুরে দাঁড়াতে নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর তার নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই তিনি আন্তর্জাতিক চাপ অনুভব করেন। কৃষিতে ভর্তুকি প্রত্যাহারের জন্য বিশ্বব্যাংক চাপ দেয়। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ গ্রহণ করেননি সদ্য প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বাংলাদেশের আত্মমর্যাদা, সম্মান এবং স্বাতন্ত্র্যকে কূটনীতিতে প্রাধান্য দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেন। এরই ফলে গঙ্গার পানি চুক্তি, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তির মতো স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজেই একাধিক বক্তৃতায় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে গ্যাস বিক্রি করতে তিনি রাজি হননি। এ জন্যই ২০০১-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমার বিবেচনায় ২০০১ সালের অক্টোবরের নির্বাচন ছিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশিদের আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার নির্বাচন। ওই নির্বাচনের আগে, বিএনপির ‘নতুন নেতা’ তারেক জিয়া ‘বিদেশি প্রভু’দের তুষ্টিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন যে যা চেয়েছে, সবকিছুতেই সায় দিয়েছিলেন তারেক জিয়া। ক্ষমতায় গেলে তাদের প্রেসক্রিপশন এবং পরামর্শ মেনে চলার মুচলেকা দিয়েই বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। প্রতিশ্রুতি দেওয়া এক কথা আর তার বাস্তবায়ন অন্য কথা। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপির পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতকে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, ক্ষমতায় এসে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার উল্টো করা শুরু হয়। যেমন ভারতের কথাই ধারা যাক। বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলের কাছে ভারতের প্রধান চাওয়া হলো, বাংলাদেশ যেন ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেয়। কিন্তু ৭৫-এর পর থেকে ২০০৮ সালের আগপর্যন্ত বাংলাদেশের কোনো সরকারই ভারতের এ অনুরোধ রাখেনি। নানাভাবে বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চলগুলো ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য নিরাপদ চারণভূমিতে পরিণত হয়। ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান তার বড় প্রমাণ। শুধু ভারতের সঙ্গে নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও বিএনপির ওয়াদা ভঙ্গের ঘটনা ঘটে। আর এরকম পরিস্থিতি ২০০৬ সাল থেকেই কূটনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় নতুন তৎপরতা। আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেউ না, তৃতীয়পক্ষকে ক্ষমতায় আনতে সবুজ সংকেত দেয় প্রভাবশালী দেশগুলো। এক-এগারোর অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আনতে বাংলাদেশের অবস্থিত কয়েকটি বিদেশি দূতাবাসের ভূমিকা, এখন কোনো গোপন বিষয় নয়। আবার সুশীলদের নিয়ন্ত্রিত এক-এগারো সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতা, অযোগ্যতার পরিপ্রেক্ষিতে প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোই বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের তাগিদ দেয়। ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে তিনি খোলামেলাভাবে এই প্রসঙ্গটি এনেছেন। তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদ ভারত সফরে গেল প্রণব মুখার্জি তাকে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের পরামর্শ দেন। যুক্তরাষ্ট্রও বুঝতে পারে ‘সুশীল’রা কথাবার্তায় যতই পটু হোক না কেন, দেশ পরিচালনায় সীমাহীন ব্যর্থ। ড. ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে সেনা সমর্থিত এক-এগারো সরকারের আসল শক্তি ছিল বিদেশি প্রভাবশালী দেশগুলো। জনগণনির্ভর না থাকায়, এক-এগারো সরকার আসলে দূতাবাসগুলোর কথায় চলত। তাদের নির্দেশেই তারা নির্বাচন এবং ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করে। ২০০৮-এর ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে। এ সময় শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থান এবং অর্থনীতিতে বিস্ময়কর অগ্রগতির কারণে বিদেশি দূতাবাসগুলোর প্রভাব কমতে থাকে। আওয়ামী লীগ দূতাবাসগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখলেও রাজনৈতিক বিষয়ে এড়িয়ে যাওয়ার নীতি শুরু করে। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে হাঁটতে শুরু করেন। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেন কেউ হস্তক্ষেপ না করে, তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেন।

ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংক, সংবিধান সংশোধন করে তা ৭২-এর আদলে ফিরিয়ে আনা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ইত্যাদি ইস্যুতে কূটনৈতিকপাড়াকে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ দেয়নি আওয়ামী লীগ সরকার। উপরন্তু ২০১৪ ও ’১৫ সালে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলনের নামে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও কেউ পছন্দ করেনি। কূটনৈতিক অঙ্গনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিএনপির সঙ্গে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সম্পর্ক, সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদে বিএনপির কোনো কোনো নেতাকর্মীর ঝোঁক দূতাবাসগুলোতে বিএনপিকে অনাহূত করে দেয়। এরকম পরিস্থিতিতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রায় একঘরে বিএনপি ড. কামাল হোসেনকে নেতা হিসেবে ভাড়া করে। ২০১৮ সালে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে দূতাবাস পল্লিতে আবার তৎপরতার সুযোগ পায় বিএনপি। ড. কামালের সঙ্গে ঐক্য বিএনপির চোখ খুলে দেয়। জনগণ না ‘বিদেশি প্রভু’দের স্বপক্ষে আনাটাই তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডায় পরিণত হয়। এরপর থেকে ঘরে-বাইরে কূটনৈতিক তৎপরতাই বিএনপির প্রধান কাজ। সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রভাবশালী দেশকে বিষিয়ে তুলতে তারা যেমন লবিস্ট নিয়োগ করেছে, তেমনি বাংলাদেশের কূটনৈতিকপাড়ায় তাদের দৌড়ঝাঁপ ফটোসেশন বেড়েছে। অনেকেই মনে করে ভারত বিএনপিকে পছন্দ করে না। বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, ভারত চাইলেই আওয়ামী লীগকে হটিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসতে পারে। এ জন্য ২০১৮ সালেও ভারতের কাছে ধরনা দিয়েছিলেন বিএনপি নেতারা। ভারত এখনো বিএনপিকে আস্থায় নেয় না, এটা ভুল প্রমাণ করতে দলটির নেতারা ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বাসায় নৈশভোজে আমন্ত্রিত হয়ে নিজেদের ধন্য করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকদের সঙ্গে দিনে একবার অন্তত কথা বলেছেন বিএনপি কোনো না কোনো নেতা। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি কী প্রমাণ করতে চায়? জনগণ নয়, দূতাবাস তাদের ক্ষমতায় আনবে? এটা দেখে সম্ভবত আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা ভয় পেয়েছেন। তারা ভাবছেন, কূটনৈতিক তৎপরতায় বিএনপি যদি আওয়ামী লীগকে কুপোকাত করে দেয়। তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে নাজেহাল করে ফেলবে। চাপে জর্জরিত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্র চাইলে কী না পারে। এমন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেই ইদানীং শোনা যায়। এ জন্য স্যুট কোট পরে মার্কিন দূতাবাসে আওয়ামী লীগের ধরনা মনে হচ্ছে, টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের একমাত্র বাধা যুক্তরাষ্ট্র। বিএনপি ব্যস্ত ‘ভারত’কে খুশি করাতে, আওয়ামী লীগ ব্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাগ ভাঙাতে। তাই, ডিনার, লাঞ্চ আর ককটেলের উৎসব চলছে দূতাবাস পল্লিতে। দুই প্রধান দল কি আবার জনগণের বদলে দূতাবাসগুলোকে ক্ষমতা বদলের নিয়ন্তা বানানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে? তাহলে জনগণ কী করবে? দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখবে?

লেখক : নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত

[email protected]

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশকে এগিয়ে নিতে কৃষির আধুনিকায়ন ছাড়া বিকল্প নেই : তাজুল ইসলাম

এবার মক্কা ও মদিনায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

বরিশালে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

জয় চৌধুরী সভ্য অভিনয়শিল্পী : শিরিন শিলা

রায়ের আগে এমন গল্পে, সেন্সরের আপত্তি : খসরু

ফুলবাড়ীতে হিটস্ট্রোকে এক নারীর মৃত্যু

ইরানের হাতে শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম

তীব্র তাপদাহে বৃষ্টির জন্য নামাজ ও প্রার্থনা

বিএনপি নেতা গয়েশ্বরের জামিন

শনিবারও খোলা থাকবে স্কুল, আসছে নতুন সিদ্ধান্ত

১০

প্রতিদিন ৫০টি চড়-থাপ্পড়েই বাড়বে নারীদের সৌন্দর্য!

১১

মোস্তাফিজের নতুন নামকরণ চেন্নাইয়ের

১২

চাঁপাইনবাবগঞ্জে হিটস্ট্রোকে ট্রাফিক পরিদর্শকের মৃত্যু

১৩

ঢাকার ‘নীল জোছনা’য় পাওলি দাম

১৪

অ্যানড্রয়েড ফোনে ই-সিম বদলানো যাবে সহজে

১৫

চিতাবাঘের আক্রমণ থেকে তারকা ক্রিকেটারকে বাঁচাল কুকুর

১৬

বৃষ্টি কবে থেকে, জানাল আবহাওয়া অফিস

১৭

আগুনে পুড়ছে শাল-গজারির বন

১৮

বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া: কাদের

১৯

সমর্থকদের সমালোচনায় হাসি পায় সাকিবের

২০
*/ ?>
X