যে বই পড়া উচিত

যে বই পড়া উচিত

অবসরে বই হতে পারে আপনার সময় কাটানোর সর্বোত্তম উপায়। এমন দারুণ কিছু বই রয়েছে; যার আকার-আয়তন-ওজন একটু বেশিই। ফলে বইগুলো দেখে অনেক সময় পড়ার আগ্রহে ভাটা পড়তে পারে। আবার এক জায়গায় বসে পড়ার পর্যাপ্ত সময়েরও থাকে অভাব। তারপরও পাঠককে এসব মোটা মোটা বই পড়ার কথা ভাবতে বাধ্য করে কিছু বই। সে ক্ষেত্রে এসব মোটা মোটা বইয়ের প্রতি যাতে অনীহা তৈরি না হয়, তাই বিকল্প পথ হিসেবে রয়েছে ই-রিডার ও অডিও বুক। এখানে বিশ্বসাহিত্যের কয়েকটি অসাধারণ উপন্যাসের নাম দেওয়া হলো; যা পাঠকের তালিকায় যুক্ত করতে পারেন।

ডেভিড ফস্টার ওয়ালেসের ‘ইনফিনিট জেস্ট’ (১০৭৯ পৃষ্ঠা): ডেভিড ফস্টার ওয়ালেসের এই মহাকাব্যটি অদূর ভবিষ্যতের ডিস্টোপিয়াকে ঘিরে লেখা হয়েছে। বইটিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো—এ তিন দেশ উত্তর আমেরিকান জাতিগত সংস্থার অন্তর্ভুক্ত হয়। ডিস্টোপিয়া হলো সাহিত্যের একটি শাখা; যা একটি কাল্পনিক রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো নিয়ে কথা বলা হয় এবং যা কেবল দুর্ভোগ আর অবিচারের রাজত্বই উপস্থাপিত হয়ে থাকে। মূল গল্পটি শুরু হয় একটি টেনিস একাডেমি এবং মাদকাসক্ত নিরাময় সংস্থাকে কেন্দ্র করে। মূল প্লট লাইনটি হলো ‘ইনফিনিট জেস্ট’ শিরোনামের একটি চলচ্চিত্র দেখার আকাঙ্ক্ষা। এটি দর্শকদের অনুভূতিহীন শিথিল অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে।

স্টিফেন কিংয়ের ‘দ্য স্ট্যান্ড’ (১৩৪৪ পৃষ্ঠা) : দ্য স্ট্যান্ড বইটি একটি পোস্ট-অ্যাপোক্যালিপটিক হরর-ফ্যান্টাসি ঘরানার বই। যেখানে বায়োলজিক্যাল ওয়ারফেয়ার বা জৈব যুদ্ধের জন্য বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের দ্রুত পরিবর্তনশীল জীবাণু নিয়ে গবেষণা করার কথা বলা হয়। দুর্ঘটনাক্রমে সেই জীবাণুগুলো একদিন একটি সুরক্ষিত গবেষণাগার থেকে বের হয়ে যায়। সেই মহামারিতে বিশ্বের ৯৯ শতাংশেরও বেশি মানুষ মারা যায়। বইটির দুটি বিকল্প সমাপ্তি রয়েছে। ১৯৭৮ সালে প্রথম প্রকাশিত ৮০০-পৃষ্ঠার মূল সংস্করণে সমাপ্তি ছিল একরকম। সেই সময় প্রকাশকরা এর চেয়ে বড় পাণ্ডুলিপি মুদ্রণ করতে পারতেন না। তবে ১৯৯১ সালের পর কিংয়ের পূর্ণ ও অপরিবর্তিত সংস্করণ প্রকাশ করে, যা ভক্তদের আরও আশান্বিত করে। একটা বিষয় নিশ্চিত যে, আপনি যে সংস্করণটিই পড়েন না কেন, সেটিই আপনাকে দীর্ঘ সময় সিটে বসিয়ে রাখবে।

বিক্রম শেঠের ‘এ স্যুটেবল বয়’ (১৫০৪ পৃষ্ঠা) : শেঠের বিশাল উপন্যাসটি ১৯৫০-এর দশকের গোড়ার দিকে স্বাধীনতা-উত্তর ভারতবর্ষ বিভাজনের পরের প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা। বইটিতে চারটি একান্নবর্তী পরিবারের ১৮ মাসের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। গল্পের চরিত্র মিসেস রুপা মেহরার একমাত্র মেয়ে লতার জন্য একজন ‘উপযুক্ত পাত্র’ খুঁজে পাওয়ার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে গল্প এগিয়ে যায়।

মার্সেল প্রুস্টের ‘ইন সার্চ অব লস্ট টাইম’ (৩০৩১ পৃষ্ঠা) : বইটিকে ১৩টি ভলিউমে ভাগ করা হয়েছে। এটির মোট শব্দসংখ্যা প্রায় ১৩ লাখের মতো। মূলত, এটি এখন পর্যন্ত দীর্ঘতম উপন্যাস হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে। এ বইটির সার-সংক্ষেপ দেওয়ার চেষ্টাও হবে ভুল।

গ্রন্থনা : সঞ্জয় হালদার

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com