সুরা ইয়াসিন পড়লে যে সওয়াব

সুরা ইয়াসিন পড়লে যে সওয়াব

পবিত্র কোরআনের প্রসিদ্ধ একটি সুরা ইয়াসিন। মহান আল্লাহ পৃথিবী সৃষ্টির এক হাজার বছর পূর্বে সুরা ইয়াসিন ও সুরা ত্বহা তিলাওয়াত করেছেন। সুরা ইয়াসিন শুধু কোরআনে কারিমের মাঝেই না বরং তাওরাত কিতাবেও এ সুরাটি ছিল। তখন এ সুরার নাম ছিল ‘মুনয়িমাহ’ বা কল্যাণ। এ সুরা পাঠকারী নিজের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ বয়ে আনে। হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক বস্তুরই একটা হৃদয় থাকে আর কোরআনের হৃদয় হলো সুরা ইয়াসিন। যে ব্যক্তি সুরা ইয়াসিন একবার পড়বে, মহান আল্লাহ তাকে দশবার পুরো কোরআন পড়ার সওয়াব দান করবেন’ (তিরমিজি)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেন, ‘সুরা ইয়াসিন কোরআনের রুহ বা হৃৎপিণ্ড। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের কল্যাণ লাভের জন্য সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে তার জন্য রয়েছে মাগফিরাত বা ক্ষমা। তিরমিজি শরিফে উল্লেখ রয়েছে, সুরা ইয়াসিন একবার পাঠ করলে দশবার কোরআন খতম করার নেকি হয় এবং পাঠকের সব গুনাহ মাফ হয়।

হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার সারা দিনের সব প্রয়োজন পূর্ণ করে দেবেন এবং সব বিপদ-আপদ থেকে তাকে রক্ষা করবেন।’ হাদিসে আরও বলা হয়েছে, রাতে সুরা ইয়াসিন পাঠ করলে নিষ্পাপ অবস্থায় ঘুম থেকে ওঠা যায় এবং পূর্বের গুনাহ মাফ হয়ে যায়।’ তাফসিরে রুহুল বয়ানে একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে তার সব মকসুদ হাসিল হবে। যে ব্যক্তি সুরা ইয়াসিন বেশি বেশি পড়ে থাকে, কেয়ামতের দিন এ সুরাই তার জন্য আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খোলা থাকবে। হজরত আবু যর (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-এর কাছ থেকে শুনেছি তিনি বলেছেন, ‘মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির কাছে সুরা ইয়াসিন পাঠ করলে তার মৃত্যুযন্ত্রণা সহজ হয়ে যায়’ (মাজহারি)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রা.) বলেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি সুরা ইয়াসিন অভাব-অনটনের সময় পাঠ করে তাহলে তার অভাব দূর হয়, সংসারে শান্তি ও রিজিকে বরকত লাভ হয়’ (মাজহারি)। ইয়াহইয়া ইবনে কাসির বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে-শান্তিতে থাকবে। যে সন্ধ্যায় পাঠ করবে সে সকাল পর্যন্ত শান্তিতে থাকবে’ (মাজহারি)।

হজরত আলি (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, সুরা ইয়াসিনের বিশেষ কতগুলো নেয়ামত হলো এ সুরা পাঠ করলে ক্ষুধা দূর হয়, পিপাসা দূর হয়, বিপদগ্রস্ত ব্যক্তির ভয় ও বিপদ দূর হয় ইত্যাদি। এ ছাড়া সুরা ইয়াসিন পাঠ করার অসংখ্য ফজিলত রয়েছে যা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি সুরা ইয়াসিন পাঠ করার তাওফিক দান করুন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com