যে বই পড়া উচিত

যে বই পড়া উচিত

অবসরে বই হতে পারে আপনার সময় কাটানোর সর্বোত্তম উপায়। এমন দারুণ কিছু বই রয়েছে; যার আকার-আয়তন-ওজন একটু বেশিই। ফলে বইগুলো দেখে অনেক সময় পড়ার আগ্রহে ভাটা পড়তে পারে। আবার এক জায়গায় বসে পড়ার পর্যাপ্ত সময়েরও থাকে অভাব। তারপরও পাঠককে এসব মোটা মোটা বই পড়ার কথা ভাবতে বাধ্য করে কিছু বই। সে ক্ষেত্রে অবশ্য এখন ব্যবস্থা রয়েছে ই-রিডার। এসব মোটা বইয়ের প্রতি যাতে অনীহা তৈরি না হয়, তাই ই-রিডার ও অডিও বুকের যুগে হাজার হাজার-শব্দকে পকেটে নিয়ে চলতে পারবেন পাঠক। এখানে বিশ্বসাহিত্যের এমন কয়েকটি উপন্যাসের নাম দেওয়া হলো; যা পাঠক পাঠ্যতালিকায় যুক্ত করতে পারেন।

হারম্যান মেলভিলের ‘মোবি-ডিক (দ্য হোয়েল)’ (৭২০ পৃষ্ঠা): তালিকাটি শুরু করছি ছোট একটি ৭২০ পৃষ্ঠার বই দিয়ে, এটি আমেরিকান লেখক মেলভিলের এক অনবদ্য সৃষ্টি। মোবি-ডিকের গল্প তার কেন্দ্রীয় চরিত্র আহাবকে ঘিরে গড়ে উঠেছে। আহাব হলেন হোয়েলিং শিপ ‘পিকোড’র ক্যাপ্টেন। তিনি একটি বিশালাকার হোয়াইট স্পার্ম তিমির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। কারণ এ তিমি তার হাঁটুর নিচ থেকে পায়ের অংশ নিয়ে গেছে। এ জন্য তিনি পাগলের মতো সাগরে সেই তিমির অনুসন্ধান করে চলেন। গল্পের বর্ণনাকারী হলেন ইসমায়েল নামে এক নাবিক। এ বইয়ের অন্যতম জনপ্রিয় প্রথম লাইনটি হলো : ‘আমাকে ইসমায়েল বলে ডাকুন।’ বইটি অদ্ভুত, পাণ্ডিত্যপূর্ণ, মজার, গভীর অর্থবহ এবং আমেরিকার অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস হিসেবে বিবেচিত।

জর্জ এলিয়টের ‘মিডলমার্চ’ (৮৮০ পৃষ্ঠা): বইটি এলিয়টের মাস্টারপিস হিসেবে বিবেচিত, উপন্যাসটি ‘মিডলমার্চ’ নামে একটি কাল্পনিক শহরের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জীবন নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে। ভদ্র সম্প্রদায়ের ভূমি মালিক থেকে শুরু করে খামার শ্রমিক বা কারখানার শ্রমিক পর্যন্ত সবার কথাই জায়গা পেয়েছে এ বইটিতে। তবে মূল ফোকাস ছিল দুটি চরিত্রকে ঘিরে, একজন হলেন জেদি ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তিসম্পন্ন ডোরোথিয়া ব্রুক এবং অন্যজন আদর্শবাদী টারটিয়াস লিডগেট। তারা দুজনই বিপর্যস্ত বৈবাহিক জীবনের শিকার ছিলেন। বইটি ১৯ শতকে লেখা হলেও এতে রয়েছে অবিশ্বাস্যরকম আধুনিকতা বোধ। কারণ বইটিতে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির সীমাবদ্ধতা এবং এ ত্রুটিপূর্ণ দুনিয়ায় একজন নৈতিক ব্যক্তি হয়ে ওঠার পথে নানা সংগ্রামের মতো বড় থিমগুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

লিও টলস্টয়ের ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’ (১২৯৬ পৃষ্ঠা): টলস্টয়ের মহাকাব্যটি রাশিয়ার নেপোলিয়ন যুগকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্র এবং হোম ফ্রন্টের মধ্যে তিনটি কুখ্যাত চরিত্র ঘিরে গল্প এগিয়ে যায়। চরিত্র তিনটি হলো, পেরে বেজুখভ, একজন কাউন্টের অবৈধ পুত্র যিনি নিজের উত্তরাধিকারের জন্য লড়াই করছেন; প্রিন্স আন্দ্রেই বলকনস্কি, যিনি নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তার পরিবার ছেড়ে চলে এসেছেন এবং নাতাশা রোস্তভ, একজন অভিজাত ব্যক্তির সুন্দরী অল্পবয়সী মেয়ে। টলস্টয় একই সঙ্গে সেনাবাহিনী এবং অভিজাতদের ওপর যুদ্ধের প্রভাব কেমন হয়, সেটা ফুটিয়ে তুলেছেন।

Related Stories

No stories found.
logo
kalbela.com