জুমার দিন কেন গুরুত্বপূর্ণ

জুমার দিন কেন গুরুত্বপূর্ণ
প্রতীকী ছবি।

মুসলমানদের কাছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন জুমার দিন। আল্লাহপ্রেমিক ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এদিনের অপেক্ষোয় থাকেন। আল্লাহতায়ালার কাছে জুমার গুরুত্ব এত বেশি যে, পবিত্র কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি সুরা নাজিল করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! জুমার দিন যখন নামাজের আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) এগিয়ে যাও এবং বেচাকেনা (পার্থিব যাবতীয় কাজকর্ম) ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে।’ (সুরা জুমা : ৯)।

মুসলমানদের কাছে এদিন অপরিসীম ফজিলতের। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে দিনগুলোতে সূর্য উদিত হয়, ওই দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। ওইদিন আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছে। ওইদিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং ওইদিনই তাকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়। আর ওইদিনই কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।’ (মুসলিম : ৮৫৪)।

আল্লাহতায়ালা আদমকে (আ.) জুমার দিন সৃষ্টি করেন। এদিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান এবং জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠান। আবার জুমার দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। এ ছাড়াও এদিন ইতিহাসে আরও বড় বড় ও মহৎ ঘটনা ঘটেছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সূর্য যেসব দিন উদিত হয় অর্থাৎ দিনগুলো মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এদিন আল্লাহতায়ালা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করেছেন। তাকে দুনিয়াতে নামানো হয়েছে। এদিন তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তার তওবা কবুল হয়েছে। এদিনই কেয়ামত সংঘটিত হবে। মানুষ ও জিন ছাড়া এমন কোনো প্রাণী নেই, যা কেয়ামত কায়েম হওয়ার ভয়ে জুমার দিন ভোর থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত চিৎকার করতে থাকে না। জুমার দিন একটা সময় আছে, কোনো মুসলিম যদি সে সময় নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, আল্লাহতায়ালা অবশ্যই তাকে তা দান করবেন।’ (আবু দাউদ : ১০৪৬)

ইসলামে জুমার দিনের সওয়াব-মর্যাদা ঈদুল ফিতর ও আজহার মতো বলে ঘোষণা করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মহান আল্লাহর কাছে জুমার দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনের মতো শ্রেষ্ঠ দিন। এদিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদাসম্পন্ন।’ (ইবনে মাজাহ : ১০৮৪)। হাদিসে আরও বলা হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা জুমার দিনের গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের আগের লোকদের উদাসীন রেখেছেন। ফলে ইহুদিদের জন্য শনিবার আর খ্রিষ্টানদের জন্য রোববার।’ (মুসলিম : ৮৫৬)

অন্য আরেকটি হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন দোয়া কবুল হওয়ার একটি সময় আছে। কোনো মুসলিম যদি সেই সময়টা পায় আর তখন যদি সে নামাজে থাকে, তাহলে তার কোনো কল্যাণ কামনা থাকলে, আল্লাহ তা পূরণ করেন।’ (বুখারি : ৬৪০০)। তাই প্রতিটি মুসলমানের উচিত জুমার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিবেচনা করা। ইবাদত-দোয়ায় দিনটিকে কাজে লাগানো।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com